পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন (to S নিশ্চয়ই এতক্ষণে এলাহাবাদের পথ পুলিস দ্বারা পাহারা দেওয়া হইতেছে। তাহা হইলে আমি শহর অতিক্রম করিয়া যাইব কি প্রকারে? মোহনের ভূ-কুঞ্চিত হইয়া উঠিল। সে নানা দিক দিয়া সমস্যার সমাধান করিতে প্রবৃত্ত হইল। কিন্তু কোনদিকেই কোন আলো দেখিতে না পাইয়া অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিল। পথের মাইল-ষ্টোন দেখিয়া বুঝিল, মাত্র দশ মাইল পরে এলাহাবাদ ; তাহার দুই মাইল পূর্বে প্রয়াগ, মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাপার, তারপর মোহন শক্র হস্তে পতিত হইবে, বন্দী হইবে। না, তাহা হইতে পারে না, কিছুতেই না। “বিলাস।” “কর্তা ?’ বিলাস উত্তর দিল। “প্রয়াগের এরোড্রোম জানিস?” মোহন দ্রুত কষ্ঠে প্রশ্ন করিল। “জানি, কর্তা।” বিলাস জানাইল। “চল সেখানে।” মোহন আদেশ দিল। পাঁচ মিনিট পরে সোজা রাস্তা ছাড়িয়া মোটর ভিন্ন পথে প্রয়াগের এরোড্রোমের উদ্দেশ্যে ছুটিতে আরম্ভ করিল। ইহার অর্ধ ঘন্টা পরে কলিকাতা-পুলিসের মোটরটি সেখানে উপস্থিত হইয়া সোজা এলাহাবাদ অভিমুখে ধাবিত হইতে লাগিল। গাড়ীর ভিতর মিঃ দাস ও মিঃ কর্মকার দেখেছি। নম্বর মিলেছে। আর আমাদের পায় কে।” (১৮) - মোহনের মোটর এরোড্রোমের ফটকে প্রবেশ করিল। পথিমধ্যে গাড়ি থামাইয়া মোহন ইউরোপীয়ান সাজে সজ্জিত হইয়া লইয়াছিল। তাহার অতি ফর্সা বর্ণের জন্য তাহাকে এ্যাংলা ইন্ডিয়ান বলিয়া সকলেরই ভ্রম হওয়া একান্ত স্বাভাবিক ছিল। মোটর এরোড্রোমে মোহন ধীর পদে এরোড্রোমের অফিসের ভিতর প্রবেশ করিলে, একজন সাহেব অগ্রসর হইয়া আসিয়া কহিল, “কোথায় যাবেন ?” ം് “দিল্লী। কোন প্লেন পাওয়া যাবে?” মোহন বিশুদ্ধ ইংরাজী উচ্চারণে জিজ্ঞাসা করিল। সাহেব হাতের ঘড়ি দেখিয়া কহিল, “এক ঘন্টা পরেওঁ রয়াল এয়ার-ওয়েজের ডাক-প্লেন আসছে। আপনি ইচ্ছা করলে তাতেই যেতে পারবেন। সিট আছে।” “অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।” বলিয়া মোহন দিল্লী অবধি টিকিট করিয়া, বিলাসের নিকট আসিয়া কহিল, “গাড়ীর নম্বর প্লেট বদলে কলকাতা ফিরে যাবি, বিলাস। যদি ট্রেনে যেতে চাস, তবে মোগলসরাইয়ে গিয়ে গাড়ী বুক্‌ ক’রে দিবি, তারপর মেলে চলে যাবি।” “আপনি কর্তা ?’ বিলাস প্রশ্ন করিল। “আমি এরোপ্লেনে দিল্লী চললাম। কলকাতায় আমার জন্য অপেক্ষ রবি। নূতন কিছু সংবাদ পাস, আমার তার পাবার পর জানাবি। আমি কোথায় তার পাঠাতে হবে জানিয়ে দেব। এই নে, খরচা।”