পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন Q Q(置 সুটকেশটি হাতে লইয়া বাহির হইতে উদ্যত হইল, এলাহাবাদের সুপার কহিলেন, “হ্যালো মিঃ ব্যানাজী, আপনি যাচ্ছেন?” মোহন মৃদু হাস্যে অনিচ্ছুক-হস্ত প্রসারিত করিয়া সুপারের সহিত করমর্দন করিয়া কহিল, “হা স্যার, গুড় নাইট।" কমিশনার মোহনের দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিলেন, “ইনি কে? একে কোথাও দেখেছি বলে যেন মনে হচ্ছে।” এলাহাবাদের সুপার হাসিতে হাসিতে কহিলেন, “ভদ্রলোকের এরূপ লোভনীয় চেহারা যে, সকলেরই পরিচিত বলে ভ্রম হয়। আমারও হয়েছিল। তিনি মোহনের ছদ্ম পরিচয় ও পেশা জানাইয়া পুনরায় কহিলেন, “খাসা ভদ্রলোক ! যেটুকু সময় আলাপ করবার সুযোগ পেয়েছিলাম, সেটুকু সময় বেশ আনন্দের সঙ্গেই কেটেছে। অলরাইট, মিঃ ব্যানাজী।” মোহন কমিশনারের দিকে হাসি মুখে চাহিয়া কহিল, “গুড় নাইট, মিঃ কমিশনার। গুড় নাইট, মিঃ সুপার।” মোহন দ্রুতপদে বাহির হইয়া একখানি ট্যাক্সিতে উঠিয়া বসিল এবং দিল্লীর প্রসিদ্ধ রয়েল হোটেলে উপস্থিত হইয়া মোহন একখানি প্রথম শ্রেণীর কামরা ভাড়া করিল এবং আহার শেষ করিয়া যখন শয়ন করিল, রাত্রি ১২ টা বাজিয়া গিয়াছে। মোহন এই ভাবিয়া নিশ্চিন্ত মনে শয়ন করিল যে, আগামী কল্য প্রভাতের পূর্বেরমাকে লইয়া মোটরখানি দিল্লী পৌছাইতে পারিবে না, সুতরাং এইটুকু সময় বিশ্রাম করিয়া ও ভবিষ্যৎ কর্ম-প্রণালী স্থির করিয়া লইতে পারিবে। মোহন ভাবিতে লাগিল, তাহার আগমন-কাহিনী প্রচারিত হইয়া গিয়াছে। তাহাকে গ্রেপ্তার করিবার জন্য পুলিসের নিপুণ আয়োজন শেষ হইয়া অপেক্ষা করিতেছে। তাহাকে পুলিসের তীক্ষ দৃষ্টি এড়াইয়া রানীকে উদ্ধার করিতে হইবে। কি করিয়া এই উভয়বিধ দুরূহ কাজ সমাধা করিতে সক্ষম হইবে, তাহা নানা পথে নানা ভাবে ভাবিয়াও মোহন স্থির করিতে পারিল না। উপরন্তু ভাবিতে ভাবিতে একসময়ে আপন অজ্ঞাতসারে সে ঘুমাইয়া পডিল। ు যখন তাহার নিদ্রাভঙ্গ হইল, তখন ছয়টা বাজিয়াছে। মোহন দ্রুতবেগে বাথরুমে প্রবেশ করিল এবং সবকিছু প্রভাতিক কর্তব্য শেষ করিয়া, ব্রেকফাষ্ট্ৰখাইয়া যখন হােটেল হইতে বাহির হইল, তখন মাত্র সাড়ে ছটা বাজিতেছে। ني মোহন যে ছদ্মবেশে দিল্লীতে আগমন করিয়াছিল, সেই ছদ্মবেশকেই সমীচীন ভাবিয়া তাহাই বজায় রাখিয়াছিল। পথে বাহির হইয়া সে উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিল। এই জনাকীর্ণ শহরের অসংখ্য অট্টালিকার ভিড়ে কেমন করিয়া তাহার প্রিয়তমাকে উদ্ধার করিবে, কিছুতেই ভাবিয়া পাইল না। আকস্মিক-প্রাপ্ত যে সহজ সূত্র ধরিয়া সে বঁকিপুরে আসিয়াছিল এবং বঁকিপুর হইতে দিল্লী আসিতে সক্ষম হইয়াছে, সে সূত্র এখানে আর নাই। যে জাল পত্ৰখানি পাইয়া রমা প্রতারিত হইয়াছে, সেই পত্রে দিল্লীর কোন ঠিকানা দেওয়া ছিল না। সুতরাং এখন সে কি করবে?