পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫০৬ মোহন অমনিবাস ভাবিতে ভাবিতে মোহন কুইনস গার্ডেনে প্রবেশ করিল এবং একখানি খালি বেঞ্চের উপর বসিয়া পড়িল। সে ভাবিতে লাগিল, “দিল্লীর মোটর পথ ও রেলওয়ে ষ্টেশন বিরাট পুলিস-বহর কর্তৃক নিশ্চয়ই অবরুদ্ধ হইয়াছে। কাজেই সে পথে পা বাড়ানো আদৌ সম্ভব নহে। তবে ?” মোহন চিন্তা করিতে লাগিল, যদি আমার গতিবিধি পুলিসের অজ্ঞাত থাকিত, তাহা হইলে পথেই রানীকে উদ্ধার করিতে পারিতাম। আমার এরোপ্লেনে আসিবার কোন প্রয়োজনই দেখা দিত না। কিন্তু এখন আমি কি করিব ? কি করিয়া রানীর সন্ধান করিব ?” মোহন অভ্যাস মত দুই চক্ষু মুদিত করিয়া চিন্তা করিতে লাগিল। এদিকে সময় অতিবাহিত হইয়া যাইতে লাগিল, কোন উপায়ই তাহার চিন্তায় ধরা পড়িল না। সে বিরক্ত হইয়া উঠিয়া পড়িল এবং বাগানে পায়চারি করিয়া ফিরিতে লাগিল। এমন সময়ে মোহন দেখিল, একটি পুলিস-বাহিনী ষ্টেশন হইতে শহরের দিকে চলিয়াছে। সে বুঝিল, যে-ট্রেনে পুলিস তাহার প্রতীক্ষা করিতেছিল, তাহা আসিয়া চলিয়া গিয়াছে। পুলিস ব্যর্থ মনোরথ হইয়া ফিরিয়া চলিয়াছে। মোহন দাঁতে ঠোট কামড়াইয়া কয়েক মুহূর্ত চিন্তা করিল, পরে ধীরে ধীরে ষ্টেশন অভিমুখে পা চালাইয়া দিল। অল্প দূরেই দিল্লী ষ্টেশন। মোহন ষ্টেশনে উপস্থিত হইয়া দেখিল, প্ল্যাটফর্ম প্রায় জনশূন্য। মাত্র কয়েকজন যাত্রী পরবর্তী ট্রেনের অপেক্ষায় এখানে-ওখানে বসিয়া রহিয়াছে। বিশিষ্ট-পরিচ্ছেদে ভূষিত একটি ভদ্রলোককে দেখিয়া একজন রেলওয়ে কর্মচারী সবিনয়ে জিজ্ঞাসা করিল, “আপনি কি ট্রেনের প্রতীক্ষা করছেন ?” মোহন কর্মচারটির দিকে কয়েক মুহূর্ত চাহিয়া থাকিয়া কহিল, “না এমনিই বেড়াচ্ছি।” কর্মচারী চলিয়া যাইবার উপক্রম করিলে, মোহন সহসা জিজ্ঞাসা করিল, “এত পুলিস এসেছিল কেন ?” কর্মচারী তাচ্ছিল্য স্বরে কহিল, “দয়াময়েরা এসেছিল মোহনকে ধরতে। যত সব বাজে সময় নষ্ট করা বইতো নয়!” భ్క মোহন বিস্মিত হইয়া কহিল, “বাজে কেন ?” (్య কর্মচারী চক্ষু কপালে তুলিয়া কহিল, “বাজে নয়? বড় বড় রখীরাই ভারি পারলো, এরা আবার ধরবে মোহনকে? আপনি কি তাকে দেখেন নিং>" মোহন হাসিতে হাসিতে কহিল, “আপনি চেনেন?” @* কর্মচারী সশ্রদ্ধ কষ্ঠে কহিল, “কি যে বলেন। তার মত মহাপুরুষকে চেনবার, জানবার সৌভাগ্য আবার হবে আমার।” সহসা কর্মচারীটি সন্ত্রস্ত ও সচকিত হইয়া উঠিল। সে সন্ধিগ্ধ দৃষ্টিতে মোহনের দিকে চাহিতে লাগিল। মোহন বুঝিল, কর্মচারী বোকের মাথায় কতকগুলি কথা বলিয়া ফেলিয়াছে, তাহাকে কহিল, “ভয় নেই আপনার, আমি কোন পুলিস-অফিসার নই।” কর্মচারীটি সভয়ে কহিল, “আমাকে মাপ করবেন আপনি। কারণ যে দিনকাল পড়েছে, আর কাউকে বিশ্বাস করা চলে না। নমস্কার, স্যার।”