পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন )סילא একান্ত কাম্যের বস্তুকে এমন স্বাধীনভাবে চলতে দেয়, সে যদি না নীচাশয় হয়, তবে আর অন্য কে হবে, রমা?” রমা নত-নেত্রে চাহিয়া কহিল, “আপনার ব্যবহারের জন্য ধন্যবাদ দেব কিন্তু এখন নয়— পরে। আপনি যদি নিজের মঙ্গল চান, তবে আমাকে মুক্তি দিন ; আমার নির্দোষী ভায়ের জীবন রক্ষা করুন।” রায়সাহেব হাসিয়া কহিলেন, “আরে, আমার এখানে আসার উদ্দেশ্যও তাই তো। কিন্তু তুমি যদি আমার প্রস্তাবে স্বীকার না হও, তবে আমি নাচার। আমি তোমাকে পূর্বেও বলেছি, এখনও বলছি, মোহনকে আমি গ্রাহ্য করি না। আমার হাতে যে শক্তি আছে, বাঙলা গভর্নমেন্টের ওপর আমার যে আধিপত্য আছে, তা’র বলে আমি একটা দসু্যর ভয়ে ভীত হব, নিশ্চয়ই তুমি তেমন অসম্ভব কথা ভাবছ না! তুমি আমার স্ত্রী হতে না চাও—আমার প্রিয়তমা হতে আপত্তি থাকবে কেন, তা’ তো বুঝিনে। এখনি সরোজ মুক্তি পাবে, তুমি রাজরানীর মত ঐশ্বর্যের মাঝে বাস করবে, তোমার বাবা মুক্তি পাবেন, এতগুলো সুবিধা ত্যাগ করে, তুমি যে কিসের মোহে একটা হীন দস্যুর জন্য কাতর হও, বোঝা তো আমার পক্ষে অসম্ভবই, উপরন্তু ব্যাপারটা হাস্যকর বটে!” রমা মুখ তুলিয়া কহিল, “র্তার রোষ থেকে রক্ষা আপনাকে কে করবে বলুন তো ? যদি আপনি মাটির নীচেও বাস করেন, তবু আপনি পরিত্রাণ পাবেন না। আপনার সঙ্গে বৃথা তর্ক করতে আমি ঘৃণা বোধ করি। আমি আপনার ঘূণিত প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করছি।” “সরোজের দ্বীপান্তর-শাস্তি হবে।” রায়সাহেবের মুখে ক্রুর হাসি ফুটিয়া উঠিল। রমা নিরুত্তর রহিল। “তোমার বাবাকে এইবার পুলিসের হাতে সমর্পণ করব। তার অতীতের গুরু-অপরাধের জন্য দ্বীপান্তর লঘু-দন্ড বলে বিবেচিত হবে।” রায়সাহেব খলখল করিয়া হাসিয়া উঠিলেন। হাসির-শব্দে রমার বক্ষের রক্ত জল হইয়া গেল। রায়সাহেব ক্ষণকাল একদৃষ্টে রমার মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়া কহিলেন, “তা’ ছাড়া দসু মোহন, যার জন্য তোমার এতখানি দরদ, এতখানি ভালবাসা, সেও আজ গ্রেপ্তার হয়ে যাবে।” a So রমা শির উন্নত করিয়া কহিল, “মিথ্যে কথা।” ഹ്) “ওই মিথ্যে সাস্তুনা দিয়ে মন শাস্ত করতে চাও করো, আমার আপত্তি নেই। কিন্তু রূঢ় সত্য যদি শুনতে চাও, তবে বিশ্বাস কর, আজু দসু মোহন গ্রেপ্তার হবে। তাকে ধরবার জন্য আমি যে-সব ফাদ পেতেছিলাম, তা’র ফলে সে এখন দিল্লীর রাজপথে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হা হা হা!” রায়সাহেব অট্টহাস্যে ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিলেন। রমা সবিস্ময়ে কহিল, “দিল্লীর রাজপথে ?” - “হা, রমা হা। তাকে যদি দূরে সরিয়ে না রাখি, তবে তোমাকে ভোগ করি কোন উপায়ে বলতে পারো ? এমন জাল পেতেছি যে, তোমার অতি বুদ্ধিমান, অতি ধনশালী, অতি চতুর মোহনও দেশ হতে দেশান্তরে ছুটোছুটি করে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছে। যাক ও-কথা, এখন শোন তুমি। তোমাকে আমি আরও একটা রাত্রি সময় দিচ্ছি, এর মধ্যে স্বীকৃত না হও, তবে আমি মোহন (১ম)-৩৩