পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& S \d মোহন অমনিবাস রমার আপাদমস্তক শিহরিয়া উঠিতেছিল। সে শঙ্কিত দৃষ্টিতে রায়সাহেবের দিকে চাহিয়া রহিল। রায়সাহেব বলিতে লাগিলেন, “তখন আমিই ঘূণায় তাদের আলিঙ্গন অস্বীকার করেছি। তাদের স্পর্শ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছি। তারা আশ্চর্য হয়ে গেছে। তারা ভয় পেয়ে ভেবেছে, এমনও হয় কি ক’রে। কিন্তু বুঝতে পারে নি। শেষে চোখের জল আর তাদের জীবনে শুকায়নি। মৃত্যুর শীতল ক্রোড়ে আশ্রয় নিয়ে তবেই মুক্তি পেয়েছে।” রমা আর্ত কষ্ঠে অস্ফুট চীৎকার করিয়া দুই হাতে মুখ চাপিয়া রহিল। রায়সাহেব হাসিতে হাসিতে কহিলেন, “কিন্তু তোমারও যাতে সেই ভুল না হয়, সেজন্যই আমার এই সর্তক-বাণী উচ্চারণ করা। তুমি শিক্ষিতা মেয়ে, তুমি বুদ্ধিমতী, মেয়ে, তুমি যদি এতখানি গোড়ামির প্রশয় দাও, তবে তো আর বঁচিনে, রমা। না, না, ভয় পেয়ো না। আমি কিছুতেই তোমার অনিচ্ছায়, তোমার গায়ে হাত দেব না। কারণ তাতে এতটুকু শান্তি পাব না। তোমার পূর্ণ-সম্মতিতেই আমি তোমাকে চাই, রমা।” কয়েক মুহুর্ত নীরব থাকিয়া পুনরায় কহিলেন, “তোমার পূর্ণ-সম্মতিতেই তোমাকে আমি চাই, রমা।” রমার মুখ হইতে বাহির হইল, “ধৃষ্টতারও একটা সীমা আছে।” কি রায় ঘোষণা করবেন। কলিকাতার একটি বিশিষ্ট ব্যক্তি, যে ব্যক্তির অঙ্গুলি-হেলনে প্রদেশের প্রধান মন্ত্রী পর্যন্ত কম্পিত হয়, দেশের শ্রেষ্ঠ ধনকুবেরদের ধনভান্ডার উন্মুক্ত হয়, তেমন একজন মহান ব্যক্তিকে ঘৃণিত হত্যার চেষ্টার অপরাধে, কি দন্ড বিচারক দেবেন, তা আমি শুনতে পাচ্ছি রমা, শুনতে পাচ্ছি। তুমিও শুনবে। আর তখনি তোমার ওই মুখ, যে-মুখ ঘৃণার সমারোহে এখন ভরে উঠেছে, ওই মুখই আবেশে ঢলঢল ভাবে ভরে গিয়ে মধুরস্বরে উচ্চারণ করবে ....” রায়সাহেব অট্টহাস্যে ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিলেন এবং হাসি থামিবার পূর্বেই কক্ষ হইতে বাহির হইয়া পড়িলেন। রমা থরথর করিয়া কঁাপিতেছিল। আর সহ্য করিতে না পারিয়া সেইখানেই বসিয়া পড়িল এবং চেয়ারের উপর মাথা রাখিবার সঙ্গে সঙ্গে হু হু করিয়া অশ্রু বাহিরে আসিয়া তাহার বক্ষ ভাসাইয়া দিতে লাগিল। * (R>) | N్య~ আজ সরোজের বিচারের দিন। দায়রা আদালতে তিল-ধারণের স্থান রহিল না। অস্বাভাবিক লোক-সমাগম দেখিয়া বিচারক আদালতের দ্বার বন্ধ করিবার আদেশ দিলেন। আদালতের দ্বার বন্ধ হইলেও, বাইরে দলে দলে লোক সমাগম হইতে লাগিল। নির্দিষ্ট সময়ের পুর্বে আদালতের ভিতরে ও বাহিরে অগণিত মনুষ্যসমাগম হইয়া জনসমুদ্রে পরিণত হইল। কয়েকমাস পূর্বে মাদ্রাজে মোহনের বিচারের সময় যেরূপ অসংখ্য কৌতুহলী নরনারীর সমাবেশ হইয়াছিল, একমাত্র তাহার সহিতই বর্তমান ব্যাপারের তুলনা চালিতে পারে, নইলে কুত্ৰাপি এরূপ অসম্ভব ব্যাপার ভারতবর্ষে পরিলক্ষিত হয় নাই। ঠিক বেলা ১১ টার সময় বিচারক আদালতে উপস্থিত হইলেন। সঙ্গে সঙ্গে আসামী সরোজকেও কড়া পুলিস-পাহারায় লইয়া আসিয়া কাঠগড়ায় প্রবেশ করানো হইল। সমবেত