পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন G. S a জনতা বিক্ষুদ্ধ হইয়া উঠিল। তাহদের মন এই তরুণ যুবকটির জন্য সহানুভূতিতে ভরিয়া গেল। বিচারক কঠিন স্বরে আদেশ দিলেন, “Silence !” জনতা স্তব্ধ হইয়া গেল। সরোজকে অত্যন্ত শীর্ণ ও ব্যাকুল মনে হইতেছিল। সে কাঠগড়ায় প্রবেশ করিয়া আগ্রহ-ব্যাকুল দৃষ্টিতে প্রতি লোকের মুখের দিকে চাহিয়া চাহিয়া কাহাকে যেন অনুসন্ধান করিতেছিল। কিন্তু অবশেষে হতাশ হইয়া তাহার দৃষ্টি অবনত হইয়া পড়িল। তাহার সারা মুখে নিরাশার চিহ্ন প্রকট হইয়া উঠিল। এমন সময়ে রায়সাহেব অবিনাশচন্দ্র রায় আদালত-কক্ষে প্রবেশ করিলেন। তাহাকে দেখিয়া জনতা অস্ফুট কণ্ঠে নানাবিধ শ্রুতিকটু মন্তব্য করিতে লাগিল এবং সমবেত মৃদু শব্দ একত্র হইয়া এমন একটা গুঞ্জন-ধ্বনি হইতে লাগিল যে, বিচারকের পক্ষে কাজ করা দূরূহ হইয়া উঠিল। তিনি জনতার দিকে চাহিয়া কহিলেন, “এই শেষ বারের জন্য আপনাদের সাবধান ক’রে দিচ্ছি, এর পর সামান্য গোলমাল হ’লেও আমি সকলকে আদালত-কক্ষের বাইরে বা’র করে দেবার আদেশ দেব।” - জনতা এইবার সম্পূর্ণরূপে নীরব হইল। সরোজের পক্ষে যে-সব আইনজীবীগণ নিম্ন আদালতে দাড়াইয়াছিলেন, দায়রা আদালতে তাহদের ওকালতনামা না দেওয়ায় আসামীর পক্ষে কোন ব্যবহারজীবী উপস্থিত ছিলেন না। সরকার পক্ষের সওয়াল আরম্ভের অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হইয়া গেল। পাবলিক প্রসিকিউটার সরকার পক্ষে দাঁড়াইয়াছিলেন। তিনি জুরাদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, “এই যুবকটির তরুণ বয়স দেখে আপনাদের ন্যায়-বিচার যেন প্রভাবিত না হয়। কারণ যুবকটি এমন এক ঘৃণিত কর্মে নিয়োজিত হয়েছিল, যা’র গুরুত্ব যে কোন সুসভ্য সমাজের পক্ষে অতিশয় বিরাট এবং তা’র দন্ড একমাত্র চরম দন্ড ছাড়া আর কিছুই হয় না। আপনারা স্থির-চিত্তে ভেবে দেখুন, এই যুবক এক গভীর রাত্রে ডাকাতির উদ্দেশ্য এই শহরের একজন অতি বিশিষ্ট, অতি সন্মানিত ধনী নাগরিক, সম্রাটের গভর্নমেন্টের রাজভক্ত নিরীহ-প্রজা ড্রয়ার থেকে দশ-হাজার টাকা প্রথমে আত্মসাৎ করে। ইতোমধ্যে রায়সাহেবের নিদ্রাভঙ্গ হয় এবং তিনি কারণানুসন্ধানে ড্রইং রুমে এসে দেখেন, দুৰ্বত্ত লুষ্ঠিত টাকাগুলি একটি রুমালে বাঁধবার উপক্রম করছে। তখন রায়সাহেব ভয়ে চীৎকার ক’রে ওঠেন, সঙ্গে সঙ্গে এই দস্য রায়সাহেবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি সৌভাগ্যক্রমে অন্য মারাত্মক স্থানে না লেগে রায়সাহেবের বাহুতে লাগে, তিনি পড়ে যান ও দসু্যকে জড়িয়ে ধরেন।” ‘ইতিমধ্যে রিভলভারের শব্দে রায়সাহেবের ভৃত্য রামচরণের নিদ্রাভঙ্গ হয়। সে ছুটে এসে আততায়ী যুবককে গ্রেপ্তার ক’রে পুলিসকে টেলিফোন করে ডাকে ও আসামীকে পুলিসের হাতে তুলে দেয়। এখন ভদ্রমোহদয়গণ ! আপনারা বিশেষভাবে চিন্তা করে দেখুন, এই আসামী লঘু দন্ড পাবার অধিকারী কি না! আমি বলি, আদৌ অধিকারী নয়। তাতে ন্যায়-বিচার ব্যাহত হবে।” “আমি আর একটি বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করে আসন গ্রহণ করব। তা’ এই