পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q > br মোহন অমনিবাস যে, এই যুবক দস্য মোহনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা সূত্রে আবদ্ধ। এই তরুণ যুবক যে এত শীঘ্র এমন ঘৃণিত দস্য ও আততায়ীতে পরিণত হতে সক্ষম হয়েছে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দসু্য মোহনের মত একটা দসু্যর প্রেরণাই তা সম্ভব করেছে। আমি আপনাদের নিকট ন্যায়বিচার প্রার্থনা করছি। ন্যায়-বিচারের নিকট জগতের কোন কিছুই প্রতিবন্ধক হবে না, আপনাদের নিকট হতে প্রত্যাশা করছি। আপনারা পাপীকে চরম দন্ড-দানের ন্যায়-বিচারের মর্যাদা রক্ষা করুন।” পাবলিক প্রসিকিউটর উপবেশন করিলেন ; রায়সাহেব তাহার পৃষ্ঠে মৃদু করাঘাত করিয়া নিম্ন স্বরে কহিলেন, “ক্যাপিটেল । অতি সুন্দর সওয়াল করেছেন। আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি।” পাবলিক প্রসিকিউটর নিম্ন স্বরে কহিলেন, “চরম দন্ড এবার কেউ রদ করতে পারবে না। তা’ ছাড়া, আসামীর কোন ব্যবহারজীবীও নেই। সরকার থেকে একটা জুনিয়ার অ্যাডভোকেট দেওয়া হয়েছিল ; আসামী কিন্তু রাজী হ’ল না।” রায়সাহেব মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়া উঠিল। তিনি নত স্বরে কহিলেন, “আপনাকে আমি আশাতিরিক্ত খুশী করব।” এমন সময়ে বিচারক মুখ তুলিয়া আসামী সরোজকে কহিলেন, “তোমার কিছু বলবার আছে ?” “আমি নির্দোষী।” সরোজ কম্পিত স্বরে কহিল। বিচারক কহিলেন, “তুমি কোন এ্যাডভোকেট দিতে চাও?’ সরোজ নত মুখে কহিল, “না।” এমন সময়ে একটি যুবক দাড়াইয়া কহিল, “মিঃ লর্ড ! আমার কিছু নিবেদন আছে।” সকলের দৃষ্টি এই সন্ত্রাস্ত যুবকের উপর পতিত হইল। রায়সাহেব তীক্ষ দৃষ্টিতে চাহিলেন ; আসামী সরোজ বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। বিচারক এক মুহূর্ত নিরীক্ষণ করিয়া কহিলেন, "কে আপনি?” “আমি মাদ্রাজ হাইকোর্টের একজন ব্যারিস্টার।এই আমার incedential,মিঃ লর্ড" বিচারক কাগজ-পত্রের উপর দ্রুত চক্ষু বুলাইয়া লইয়া কহিলেন, “আপনি কি চান?” যুবক কহিল, “আমি এই হতভাগ্য যুবকের জন্য সওয়াল করতে চাই। আমি গত প্রত্যেকটি দিনে হাজির থেকে এই কেসটি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করেছি এবং আমি নিজে বিশেষভাবে ভেবে দেখেছি। আমি হুজুরের কাছে একান্ত প্রার্থনা জানাচ্ছি যে, আমার আবেদন মঞ্জুর করা হোক।” - - বিচারক যুবক-প্রদত্ত কাগজগুলির দিকে একবার চাহিয়া কহিলেন, “মিঃ বিন্দু, আমি আপনার প্রার্থনা মঞ্জুর করুলুম। কারণ আসামী এই আদালতে নিজের জন্য কোন ব্যবহারজীবী নিযুক্ত করে নি। আমি গভর্নমেন্টের পক্ষ থেকে একজন এ্যাডভোকেট নিযুক্ত করেছিলুম, কিন্তু তিনি আসামীর কাছ থেকে কোন পরামর্শ না পেয়ে, এক পাও অগ্রসর হতে পারেন নি। সুতরাং আপনি যদি পারেন, তবে আমার পক্ষ থেকে আপত্তির কোন হেতুই নেই।” আদালত-কক্ষে একটা গুঞ্জন ধ্বনি উঠিয়া সহসা নীরব হইয়া গেল।