পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন ዕt » S সরোজ এক দৃষ্টে এই অভাবিত পরিণতির হেতুরূপে দন্ডায়মান অপরিচিত যুবকটির দিকে নির্নিমেষ দৃষ্টিতে চাহিয়াছিল। সহসা তাহার চক্ষু দুটি অশ্রুসজল হইয়া উঠিল। তাহার মুখ হইতে দুশ্চিস্তার স্পষ্ট আভাস ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হইয়া যাইতে লাগিল। সে পলকহীন দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। - এদিকে রায়সাহেব কিছু বুঝিতে না পারিয়া সাতিশ্রয় উদ্বিগ্ন ও অস্থির হইয়া উঠিলেন। তিনি নিম্নস্বরে পাবলিক প্রসিকিউটরকে কহিলেন, “কি ব্যাপার বলুন তো ?” পাবলিক প্রসিকিউটর কহিলেন, “আপনি মাদ্রাজের রাইজিং ব্যারিষ্টার মিঃ বিন্দুর নাম শোনেন নি ? তিনি অতি অল্প দিনে আইনের ব্যবসায়ে সমধিক কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন। ছোড়াটার ভাগ্য-জোর আছে বলতে হবে। যদিও ওঁর সব পরিশ্রমই পন্ড হবে।” রায়সাহেব উৎসুক হইয়া কহিলেন, “আপনি তা’ হ’লে মিঃ বিন্দুকে চেনেন ?” “মিঃ বিন্দুকে চেনে না এমন কোন আইনজ্ঞ ভারতে নেই, রায়সাহেব।” পাবলিক প্রসিকিউটর সশ্রদ্ধ স্বরে কহিলেন। - রায়সাহেবের মুখ হইতে সকল উদ্বেগের চিহ্ন নিরসন হইয়া গেল। যুবক মিঃ বিন্দু জুরীগণের দিকে চাহিয়া আরম্ভ করিলেন, — “মাননীয় ভদ্রমহোদয়গণ। আপনাদের আমি বেশী সময় নষ্ট করব না। এই কেসের মধ্যে এমন কোন কঠিন সমস্যা নেই, যা এই আদালত-গৃহের চারি কোণের মধ্যে সমাধান হবে না। আপনারা প্রথমেই জেনে রাখুন, ফুলের মত এই তরুণ যুবকটি ফুলের মতই নিষ্পাপ এবং পবিত্র। সাময়িক যে ক্লেদ ফুল-দলে লেগেছে, সামান্য বাতাসেই তা উড়ে যাবে। আমি ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে বক্তৃতা করে আপনাদের ধৈর্য পরীক্ষা করতে চাই না। আমি জীবনে এর চেয়ে জটিল কেসের বহু মীমাংসা করেছি। এই কেসেরও মীমাংসা এমন এক অভিনব উপায়ে করেছি, যা আপনারা এখনি এখানে দেখতে পাবেন। আমি বিশ্বাস করি, দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, আপনারা এই অভিনব পস্থা দেখে প্রীত হবেন। মহামান্য বিচারক পর্যন্ত বিস্মিত ও স্তম্ভিত হবেন।” *. శ్రి* যুবক এক মুহূর্ত নীরব থাকিয়া আদালত কক্ষের চারিদিকে একবার দৃষ্টি বুলাইয়া বিচারক কহিলেন, “কি প্রার্থনা, মিঃ বিন্দু ?” মিঃ বিন্দু কহিলেন, “আমি সেদিন রাত্রে সত্যই কি ঘটেছিল, এখানে তা demonstrate করতে চাই। আপনি যদি দয়া ক’রে রায়সাহেবকে আমার সম্মুখে এসে পাঁচ মিনিটের জন্য বসতে বলেন, তা’ হ’লে আমার argument অতীব সরল ও সহজসাধ্য হয়। আপনি কি আমার প্রার্থনা পূর্ণ করবেন, মিঃ লর্ড?” “ও ! নিশ্চয়ই।” বিচারক রায়সাহেবকে যথাযথ আদেশ দিলেন। রায়সাহেবের মুখ শুষ্ক হইয়া উঠিল। তিনি প্রতিবাদ করিতে যাইবার পূর্বেই বিচারকের দ্বিতীয় আদেশ বাহির হইল। তিনি কহিলেন, “মিথ্যে সময় নষ্ট করছেন আপনি।”