পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Փ ՀՀ মোহন অমনিবাস বলুন, সে বস্তুটি কী ? রায়সাহেব তখন পশু হাস্যে উদ্ভাসিত হয়ে বলেন, “তোমার বোন রমাকে যদি আমাকে দিতে পার, তা হ’লে – রায়সাহেবের মুখের কথা মুখেই থাকে। আসামী ভয়ানক ক্রুদ্ধ হ’য়ে পকেট থেকে রিভলভার বার ক’রে উদ্যত ক’রে বলেন, ‘আবার যদি ওই পাপ-কথা আপনি মুখে উচ্চারণ করেন, তা হলে আপনাকে কুকুরের মত গুলি ক’রে মারব। রায়সাহেব এমন আকস্মিক পরিস্থিতিতে ভয় পান। কিন্তু ধূর্ত অমানুষিক অভ্যাস-বলে সহসা হাসতে আরম্ভ করেন। বলেন, আমি পরিহাস করছিলাম , সরোজ। দেখছিলাম তোমার চরিত্রবল কতখানি।’ এই বলে পুনরায় হাসতে থাকেন। আসামী লজ্জিত হ’য়ে বলেন, “আমাকে মার্জনা করবেন। কিন্তু এমন পরিহাসও আমাজনীয়। এরপর অন্যান্য দু-একটা কথা বলে, সহসা রায়সাহেব আসামীর হাত থেকে রিভলভারটা ছিনিয়ে নেন ও উদ্যত ক’রে বলেন, "বদমাশ, এইবার যদি তোকে কুকুরের মত হত্যা করি, তবে কে তোকে রক্ষা করে ? আমি আবার বলছি, হয় লাখ টাকা এখনি দিতে হবে, নয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে তোর বোনকে এখানে পাঠাতে হবে।’ মিঃ বিন্দু বিচারকের দিকে চাহিয়া গম্ভীর কষ্ঠে বলিতে থাকেন, “মি. লর্ড, আসামী যুবক। এত বড় অপমান সহ্য করতে না পেরে রায়সাহেবের ওপর ব্যাঘ্ৰ বিক্রমে লাফিয়ে পড়েন। রায়সাহেব সেই আক্রমণের বেগ সহ্য করতে না পেরে সটান মেঝের ওপর পড়ে যান এবং রিভলভারের ঘোড়া পতনের বেগে নড়ে যায়, ফলে তিনি আহন হন।” মিঃ বিন্দু এইখানে ক্ষণকালের জন্য নীরব হইলেন। সারা আদালত-কক্ষে গভীর স্তব্ধতা বিরাজ করিতে লাগিল। বিচারক ও জুরীগণের মতে মিঃ বিন্দুর কাহিনী এক অপূর্ব কাহিনীরূপে ধ্বনিত হইতে থাকে। মিঃ বিন্দু পুনরায় আরম্ভ করিলেন, রিভলভারের শব্দ শুনে রায়সাহেবের ভৃত্য রামচরণ ছুটে আসে। এসে দেখে আসামী বিহুল দৃষ্টিতে রায়সাহেবের যন্ত্রণা-কাতর মুখের দিকে চেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভৃত্যকে দেখে রায়সাহেব চীৎকার করে বলেন, “এই দস্য আমাকে গুলি করেছে—পুলিস ডাক।” এই অবধি বলিয়া মিঃ বিন্দু একমুহূর্ত রায়সাহেবের শুষ্ক ভীতি-বিহুল মুখের দিকে পূর্ণ হইয়া আলোকিত হইয়াছে। তাহার দুটি বিস্ফোরিত চক্ষু মিঃবিন্দুর মুখের উপর একাগ্র হইয়া রহিয়াছে। মিঃ বিন্দুর সহিত সরোজের দৃষ্টি মিলিত হইলেই সরোজের ঠোট দুটি কঁপিয়া উঠিল। সে যেন কিছু বলিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু মিঃ বিন্দু সবেগে মুখ ফিরাইয়া লইয়া বিচারকের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “ধর্মাবতার ! আমি যে-কাহিনী বর্ণনা করলাম, তা’র সত্যাসত্য নির্ধারণের জন্য আমি রায়সাহেবকে কয়েকেটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবার অনুমতি প্রার্থনা করছি।” - বিচারক কহিলেন, “আমি অনুমতি দিলাম। পাবলিক প্রসিকিউটর ব্যর্থ প্রতিবাদ করিয়া বসিয়া পড়িলেন। মিঃ বিন্দু মৃদু হাসি মুখে রায়সাহেবের বিহুল মুখের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “যে দলিলের বলে আপনি আজ প্রতিষ্ঠার শীর্ষদেশে দাঁড়িয়ে আছেন, সেই দলিল কি আপনার