পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 8 মোহন অমনিবাস সম্মুখে দেখিলেন, একটা ঠেলা গাড়ীতে এক বৃহৎ ট্রাঙ্ক বহন করিয়া দুইজন কুলী ভিতরমহলে প্রবেশ করিতেছে এবং স্থানীয় ডিটেকটিভ ভদ্রলোক সঙ্গে সঙ্গে আসিতেছেন। নীলরতনবাবু ড্রইংরুম হইতে বাহির হইয়া কহিলেন, “কার ট্রাঙ্ক ? কি আছে ভিতরে ?” ডিটেকটিভ একখানি পত্র তাহার হাতে দিলেন। খামের উপর তাহার নাম লেখা। তিনি পত্ৰখানি খুলিবার পূর্বে ডিটেকটিভ কহিলে, “মিঃ স্যানিয়েল দিয়েছেন। ঠিক সাড়ে এগারোটার মধ্যে পত্র ও তোরঙ্গ আপনার কাছে দেবার জন্য বার বার বলে দিয়েছিলেন। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, তার আদেশ পালন করতে পেরেছি!” ইতিমধ্যে বৃদ্ধ জমিদার পত্ৰখানি খুলিয়া পড়িলেন, তাহার হাত কঁাপিতেছিল। তিনি সমস্ত শক্তি একত্র করিয়া ট্রাঙ্কটি অবিলম্বে খুলিবার জন্য আদেশ দিলেন। ডিটেকটিভ জমিদারের বিবর্ণ মুখভাব ও কম্পিত হস্ত লক্ষ্য করিয়া, কোন অনাগত বিপদের আশঙ্কায় কোন প্রশ্ন না করিয়া, ট্রাঙ্কের গায়ে যে চামড়ার ফিতা জড়ানো ছিল তাহা দ্রুত হস্তে খুলিয়া ফেলিতেই দেখিলেন, ট্রাঙ্কে চাবি দেওয়া নাই। তিনি ডালাটি তুলিতেই সবিস্ময়ে দেখিলেন যে, বিশ মিনিট পূর্বে যে মিঃ স্যানিয়েল র্তাহাকে এই ট্রাঙ্কটি জমিদার কি হইয়াছে, কি ঘটিয়াছে তিনি আলোচনা করিবার পূর্বেই ডিটেকটিভ ভদ্রলোক উপস্থিত সকলের সাহায্যে ভিতরের মানুষটিকে ধরাধরি করিয়া বাহিরে আনিয়া ড্রইংরুমে একটি বৃহৎ সোফার উপর শয়ন করাইয়া দিলেন ও শুশ্রুষা করিতে লাগিলেন। অল্প সময় পরে ভদ্রলোকের জ্ঞান ফিরিয়া আসিল;তিনি কাহারও নিষেধ না মানিয়া সোফার উপর উপবেশন করিয়া প্রথম প্রশ্ন করিলেন, “আমি কোথায় এখন?” জমিদার মহাশয় ইতোমধ্যে সামলাইয়া লইয়াছিলেন; কহিলেন, “আপনি কি মিঃ স্যানিয়েল, বিখ্যাত ডিটেকটিভ-ইনস্পেক্টর?” ভদ্রলোকের মুখে ব্যথিত-হাসি ফুটিয়া উঠিল। কহিলেন, “আর বিখ্যাত নই, সে যা’ হোক, আমিই মিঃ স্যানিয়েল। আমায় জবাব দিন, আমি কোথায় ? কেমন করে এলাম এখানে ?” இ. জমিদার আপন পরিচয় দিয়া কহিলেন, “কিন্তু এ দশা যে আপনার দসু মোহন করেছে, তাতে আমার সন্দেহ নেই।” স্থানীয় ডিটেকটিভের দিকে চাহিয়া বলিলেন, “আপনি এখনি পুলিস-সুপারকে সংবাদ দিন, এখানে আসতে বলুন। আরও বলবেন, মোহন স্বয়ং এসে আমাকে শেষবার সতর্ক কোরে পত্র দিয়ে গেছে।”৬ সকলের মুখে বিস্ময় ফুটিয়া উঠিল। জমিদার টেবিলের ড্রয়ার হইতে শীলমোহর করা পত্ৰখানি বাহির করিয়া পাঠ করিলেন ও আসল মিঃ স্যানিয়েলের হস্তে দিয়া বলিলেন, “যে ভাবেই হোক দস্য আপনাকে বেকায়দায় পেয়ে এমন ভাবে পরাজিত করেছে, তা বুঝেছি। কিন্তু আমি কি ভাবছি জানেন, যে-দসু্য আপনার মত ব্যক্তিকেও এমনভাবে নাজেহাল করতে পারে, তার বিরুদ্ধে আমি রক্ষা পাব কি উপায়ে ?” নীলরতনবাবুর মুখ আসন্ন বিপদ-আশঙ্কায় বিষগ্ন হইয়া উঠিল। মিঃ স্যানিয়েল দসু মোহনের পত্ৰখানি পাঠ করিতেছিলেন,তাহার মুখ ক্রোধে, ঘৃণায় রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল। পত্ৰখানি এইরূপ ৪—