পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QW。 মোহন অমনিবাস পুলিস-প্রহরী ড্রইংরুম নির্দেশ করিয়া কহিল, “এই সিড়ি দিয়ে উপরে যান। ড্রইংরুমে মেমসাব আছেন।” - - মোহন সোফারকে ইঙ্গিত করিয়া উঠিতে লাগিল, পরে ড্রইংরুমের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া সোফারকে নিম্ন স্বরে কি আদেশ দিল ও তাহার হাত হইতে ছবিখানি লইয়া তাহাকে বিদায় করিয়া দিল। সম্মুখে আগমন সংবাদ জানাইবার ইলেকট্রিক ঘণ্টা দেখিয়া, মোহন তাহা বাজাইলে, মেম সাহেবের একজন খানসামা বাহিরে আসিল। মোহন কহিল, “মেম সাহেবকে সংবাদ দাও। বলো তার ছবি এনেছি।” খানসামা মোহনকে সন্ত্রান্ত লোক ভাবিয়া, সমাদরের সহিত ভিতরে বসাইয়া মেম সাহেবকে সংবাদ দিতে গেল। - অনতিবিলম্বে বিস্মিত মেমসাহেব শয়ন কক্ষ হইতে ড্রইংরুমে প্রবেশ করিলে মোহন দাড়াইয়া কহিল, “গুড় মনিং!” “গুড় মনিং, বাবু। কে আপনি? কে ছবি পাঠিয়েছেন?” মেমসাহেব সবিস্ময়ে প্রশ্ন করিলেন। মোহন সুবৃহৎ ছবিখানার প্যাকিং খুলিতেছিল,কহিল “আপনার প্রতিবেশী উৎপলবাবুর কথা নিশ্চয়ই আপনি ভুলে যান নি! আমিই সেই আর্টিস্ট।” - মোহন মৃদু হাস্যে মুখ তুলিয়া মেম সাহেবের রক্তহীন শ্বেত মুখের দিকে চাহিল। স্বাধীন দেশের পুলিস কমিশনারের মেমসাহেব স্ত্রী কয়েক মুহুর্তের ভিতর আপনাকে সংযত করিয়া বিস্ফারিত দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিলেন, তুমিই দসু্য মোহন?” “হ্যা ম্যাডাম, আমিই দসু মোহন। এই নামেই যদি আমায় পরিচিত করতে চান আমার কোন আপত্তি নেই। আমি আপনার স্বামীর নিকট প্রতিশ্রুতি ছিলাম যে, আপনাকে আমার হাতে আঁকা ছবি দেবো। আজই দেবার দিন ছিল। দেখছি অন্যান্য ব্যাপারের দরুন আমার কথা আপনারা ভুলে গেছেন।” মোহন মৃদু হাস্যমুখে শান্ত কণ্ঠে কহিল। মেমসাহেব সেই অসমসাহসিক বাঙালী যুবকের দিকে কিছু সময় এক দৃষ্টে চাহিয়া রহিলেন। তাহার যেন আর কিছুতেই বিশ্বাস হইতেছিল না, যে এমন সাহসী যুবকও এই পরাধীন দেশে জন্মগ্রহণ করিতে পারে! কহিলেন, তুমিই বিখ্যাত দস্য মোহন?” মোহন স্নিগ্ধ হাসে কহিল, “জীবনে আমি মিথ্যা কথা বলিনি, মেমসাহেব। আমিই মোহন—দসু মোহন!” Q মেমসাহেব কহিলেন, “আপনাকে তো আমি যেতে দেব না। আপনাকে আমি পুলিসের হাতে সমর্পণ করবো। আপনি মানবতার শত্রু। আপনাকে আমি কিছুতেই ছেড়ে দেব না। আমি এখনই কমিশনারকে সংবাদ দিচ্ছি।” । মেমসাহেব কক্ষ মধ্যস্থ টেলিফোনের নিকট সরিয়া গেলেন। মোহনের মুখে মৃদু হাসি লাগিয়াই ছিল। কহিল, “এত তাড়া কিসের, ম্যাডাম? আমি তো উপস্থিত রয়েছি। আপনি একটু চিৎকার করলেই ফটকের পুলিস-প্রহরীও আমাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। তা ছাড়া খানসামা, বেয়ারা—এরাও তো সেপাই? এরাও রয়েছে। তবে বৃথা তাড়াহুড়ো না কোরে আমি যে কাজে এসেছি তা’ আগে শেষ করতে দিন।