পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ն Հ মোহন অমনিবাস এবং তৎক্ষণাৎ সি. আই. ডি. বিভাগের বড়কর্তাদের আপন চেম্বারে অপরাহু ৫টার সময় সমবেত হইবার জন্য আদেশ জারি করিলেন। - তিনি স্থির করিলেন, যেমন করিয়া হউক দস্য মোহনকে ২০শে তারিখে গ্রেপ্তারের বন্দোবস্ত করিতে হইবে। এই ঘটনার পর তাহার আর বিন্দুমাত্রও দ্বিধা বা সন্দেহ রহিল না যে, মোহন তাহার কথা রক্ষা করিতে অর্থাৎ জমিদার নীলরতনকে হত্যা করিতে নির্ধারিত দিনে, নির্ধারিত সময়ে যাইবেই। সুতরাং এরূপ বিরাট সুযোগ যাহাতে আর উপেক্ষিত অথবা অবহেলিত না হয়, তাহার আয়োজন করিবার জন্য তিনি মনোনিবেশ করিলেন। অপরাহু ৬টা। কমিশনারের গোপনীয় চেম্বারের বড়কর্তাদের অধিবেশন হইয়া কৰ্ম পস্থা স্থির হইয়া গেল। একখানি জরুরী টেলিগ্রামে মিঃ স্যানিয়েল ও সাব-ডিভিসন্যাল পুলিস-সুপারকে জানানো হইল যে, আগামী কল্য কলিকাতা হইতে একটি বিশেষ পুলিসবাহিনীর সহিত একজন বড় অফিসার তাহাদের আগামী ২০ শে বৈশাখ তারিখের কর্তব্যকর্মে সাহায্য করিবার জন্য রওনা হইতেছেন। তাহাদের জন্য সকল বন্দোবস্ত প্রস্তুত রাখিবার আদেশ জানানো হইল। (>3) আশুতোষবাবু কন্যার আগামী শুভ-বিবাহের আয়োজন প্রায় সম্পূর্ণ করিয়া আনিয়েছেন। কিন্তু তাহার দুর্ভাবনার আর অন্ত নাই। যদি নীলরতন, শেষ মুহুর্তে প্রাণ-ভয়ে ভীত হইয়া মত পরিবর্তন করিয়া বসেন, তাহা হইলেই সর্বনাশের চুড়ান্ত হইবে। র্তাহার ঋণ পরিশোধ হইবে না, সমস্ত সম্পত্তি ব্যর্থমনা জমিদারীর ক্রোধের কবলে পতিত হইবে। উপরন্তু যে সমস্ত অর্থ তিনি বিবাহ আয়োজনের হেতু প্রদর্শন করিয়া লইয়া আসিয়াছেন, তাহার পরিমাণও এরূপ বিরাট যে, তাহা পরিশোধের কোন পন্থাই কোন দিকে নাই। কন্যা জমিদার-গৃহিণী হইবে, বিরাট জমিদারীর অর্ধেক সম্পত্তির উইল বলে উত্তরাধিকারিণী হইবে, ভবিষ্যতে তিনি জমিদার হইয়া বসিবেন, এই সকল আশাই তাহা হইলে আকাশকুসুমে পরিণত হইবে। ইহা অপেক্ষা দুদৈর্ব আর কি আছে? দুইদিন মাত্র বাকি। কিন্তু জমিদার নীলরতন যেরূপ ভয়ে ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছেন, এমনকি তাহার সহিতও দেখা করিতে ভয় পাইতেছেন এরূপ ব্যক্তি যে শেষ অবধি ভীত হইয়া মত পরিবর্তন করিবেন না, তাহা কে বলিতে পারে? - ভাবিলেন, দসু মোহন যে এরূপভাবে তাহার সহিত শক্ৰতা আরম্ভ করিবে, কে ভাবিয়াছিল? যত সব ভাবপ্রবণ ইডিয়টের দল শুভ-অশুভ বিচার না করিয়াই, মুখের মত এমন গো ধরিয়া বসিয়া থাকে, যাহা হইতে কিছুতেই টলানো যায় না। অদূরে মাধুরীকে দেখিয়া ভাবিলেন, মেয়েটাও এই সব বিপদের কথা ভাবিয়া আধখানি হইয়া গিয়াছে। কচি মেয়ে ওর আর শক্তি কতটুকু? আমিই যখন ভয়ে আত্মহারা হইয়া উঠিয়াছি, তখন ওই ক্ষীণপ্রাণ কি করিয়া সহ্য করিবে ? তিনি ডাকিলেন, “মাধুরী! শুনে যাতো মা।”