পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন لي سفيا মাধুরী ধীর পদক্ষেপ পিতার সম্মুখে আসিয়া নত মুখে দাড়াইল। আশুতোষবাবু কহিলেন, “হা-রে ঐ বাঙলার ডাক’ না-কি কাগজ সেদিন পড়ছিলি, কালকের সেই কাগজটা তোর কাছে আছে, মা ? মাধুরী নত মুখে কহিল, “আছে, বাবা।” “আছে? একবার দে তোমা, ঐ হতভাগ্য দসু্যটার কথা কিছু লিখেছি কি-না দেখি।” আশুতোষবাবু সাগ্রহে কহিলেন। মাধুরী আপন কক্ষে চলিয়া গেল। মাধুরীকে কে যে প্রত্যহ তাহার পিতার কেয়ার অফে ডাকে সংবাদপত্র পাঠায় তাহা সে অনেক চিন্তা করিয়াও বুঝতে পারে নাই। তবুও তাহার মনে ক্ষীণ সন্দেহ ছিল যে, হয়তো তাহার সুদাই পাঠাইয়া দেন। কিন্তু কেন? কি উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে তাহার ইহাতে ? মাধুরী গোপনে বাঙলার ডাকে প্রকাশিত মোহনের সম্বন্ধে যেকোন সংবাদ আগ্রহের সহিত অনুসন্ধান করিয়া পাঠ করিত। সে যখন প্রথমে পড়িল যে দসু মোহন তাহার বিবাহ বন্ধ করিবার জন্য জমিদারী নীলরতনকে এক ভয়ানক পত্র দিয়াছে, তখন তাহার সরল মন আনন্দে উদ্বেলিত হইয়া পরক্ষণেই এই ভাবিয়া কাতর হইয়া উঠিল যে, যদি সে তাহার কথা রক্ষা করে তবে তাহার পিতাকে ঋণমুক্ত করিবে কে? কি হইবে, কি হইবে না, কি হওয়া উচিত ভাবিবার শক্তি মাধুরীর ছিল না; সে পল্লীগ্রামের অদৃষ্টবাদী বাঙালীর ঘরের মেয়ের মত আপন অদৃষ্টের উপর নির্ভর করিয়া ভাবনা-চিন্তার হাত হইতে মুক্তি পাইয়াছিল। - আশুতোষবাবু কন্যার নিকট হইতে বাঙলার ডাক পত্রিকখানি লইয়া খুলিতেই দেখিলেন যে চীফ ডিটেকটিভ ইনস্পেক্টর মিঃ স্যানিয়েলের কাহিনী ও দসু মোহনের কৌতুহলজনক অভিযানের ইতিহাস সবিস্তারে প্রকাশিত হইয়াছে। তিনি সহসা অস্ফুট কণ্ঠে চিৎকার করিয়া উঠিলেন, সর্বনাশ! আমার বন্ধকী দলিল চুরি কোরে নিয়ে গেছে! তবে? তাই মোহনের স্টেশন থেকে পাঠানো পত্ৰখানা নীলরতন গোপন করেছিল। না দেখছি, দসু্যটা আমার সর্বনাশ করবার জন্যই জমিদারের পিছনে লেগেছে। এখন আমি কি করি? কি কোরে সত্য সংবাদ অবগত হতে পারি? নীলরতন—নীলরতন কিছুতেই স্বীকার করবে না। সে জানে, তার হাতের রঙের তাস মারা গেছে শুনলে সব খেলা ভেঙে যাবে।” । আশুতোষবাবু গভীর চিন্তামগ্ন হইলেন। এমন সময়ে ডাকপিয়ন আসিয়া একখানি পত্র দিয়া গেল। তিনি পত্ৰখানির খাম ও হাতের লেখা দেখিয়া বুঝতে পারলেন, যে-সর্বনেশে চিন্তা তাঁহার মন দখল করিয়া বসিয়াছে, তাহারই জ্বলন্ত শমন রক্ত-চক্ষু লইয়া উপস্থিত হইয়াছে। - mu তিনি পত্ৰখানি বাহির করিয়া লইয়া পাঠ করিতে লাগিলেন। র্তাহার মুখভাব অতিশয় গভীর ও চিন্তাযুক্ত হইল। এই পত্ৰখানিও নিম্নে অবিকলভাবে উদ্ধৃত করা হইল ঃ– সবিনয় নিবেদন, আশা করি দসু্যর পরিচয় আপনার নিকট নূতন করিয়া দিবার প্রয়োজন হইবে না। আপনি যে একটি অতিমাত্রায় নরাধম, অর্থ-পিশাচ, দয়া-মায়া-হীন, হিংস্র পশুতুল্য ব্যক্তি,