পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন অমনিবাস טאיטלי কহিলেন, “তা ঠিক। মোহনের নুতন কীর্তির কথা শুনলে আর কোন কিছুই তার পক্ষে অসম্ভব বলে মনে হয় না।” অফিসারের কথা শুনিয়া মিঃ স্যানিয়েল ও সুপার উভয়েই বিস্মিত দৃষ্টিতে চাহিলেন। মিঃ স্যানিয়েল সবিস্ময়ে কহিলেন, “নুতন কীর্তি। কই, কোন কাগজে এমন কী বাঙলার ডাকে-ও দেখলাম না তো?” অফিসার চিন্তিত স্বরে কহিলেন, “কেন যে সে তার এমন একটা অভিনব কীর্তির কথা সংবাদপত্রে পাঠালে না, তা’ আমাকেও বিস্মিত করেছে। লোকটা একদিকে যেমন নির্মম, নিষ্ঠুর, কঠোর, হিংস্র; অন্যদিকে তেমনি দয়ালু, প্রাণবন্ত, কুসুম-কোমল, ন্যায়নিষ্ঠ। এই সংবাদ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হ’লে পুলিসের সর্বোচ্চ বিভাগে যে বিপর্যয় সংঘটিত হতো, তা আমরা কল্পনা করতেও পারি না। কিন্তু যেখানে সে নিষ্ঠুর আঘাত কোরে আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারতো, সেখানেই যে সে কেন উপেক্ষা দেখালে, সে এক কল্পনাতীত সমস্যা।” অফিসার সকিস্তারে মোহনের ছবি ও কমিশনারের স্ত্রীর সহিত কথোপকথনের রোমাঞ্চকর কাহিনী বিবৃত করিলেন। উভয় শ্রোতাই নীরবে দসু মোহনের অদ্ভুত কীর্তি শ্রবণ করলেন। কেহই কোন মন্তব্য প্রকাশ করিলেন না। সকলের মনেই একটি সশ্রদ্ধ অনুভূতি নড়িয়া চড়িয়া বেড়াইতে লাগিল। অফিসার কিছু সময় নীরবে থাকিয়া কহিলেন, “একটা বিষয়ে আমার খুব খট্‌কা ঠেকে। আচ্ছা থাক সে কথা, এখন আসুন, আমি স্বচক্ষে আপনার নিপুণ বন্দোবস্ত একবার দেখে আসি ও জমিদারের সঙ্গে পরিচিত হ’য়ে আসি।” তিনজন উচ্চপদস্থ পুলিস-কর্মচারী বাহির হইয়া কলিকাতা হইতে লইয়া আসা পুলিসকারে আরোহণ করিলেন। (২১) পথে কেহ কোন কথা কহিলেন না। পূর্বে যেরূপ কোন মোটর জমিদার-প্রাসাদের দিকে যাইবার সময় পথের দুই পার্শ্বে লোকারণ্য দেখিতে পাওয়া যাইত, অদ্য তাহার অভাব দেখা গেল। পুলিস সুপারমি সানিয়েলের নিপুণতা পরিপূর্ণভাবে অনুভব করলেন। পথের মধ্যে অল্প পরিসর ব্যবধানে পুলিস-প্রহরী খাড়া রহিয়াছে। যে পথ দিয়া মোটর ছুটিতেছিল, গ্রামের মধ্যে এই পথটিই সর্বাপেক্ষা বৃহৎ রাস্তা। স্টেশন হইতে থানা ঘুরিয়া জমিদার-প্রাসাদে গিয়া পথ শেষ হইয়াছে। o একটি চৌমাথায় আসিয়া চীফ-অফিসার মোটর থামাইবার আদেশ দিয়া, অবতরণ করিলেন। তিনি পুলিস-সুপারের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “এর মধ্যে যে একটা রাস্তা । প্রাসাদে গেছে, তাতে আমার সন্দেহ নেই। বাকি তিনটি কোথায় গেছে বলুন ত?” পুলিস-সুপার কহিলেন, “পূর্বদিকের পথ এখান হতে দশ মাইল দূরে দ্বিতীয় রেলস্টেশনে গিয়ে মিশেছে। পশ্চিম দিকের পথ সোজা বর্ধমানে গিয়ে শেষ হয়েছে, আর দক্ষিণ দিকের পথ আমাদের স্টেশন গিয়ে মিশেছে। আর উত্তর দিকের........”