পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন । Ե Գ একটি সুশ্রী যুবক, তার নাম প্রফুল্ল মিত্র, সে মিস সোমের দৃষ্টি আকর্ষণ করবার জন্য নানারূপে চেষ্টা কোরে আমার উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিল। সে বললে, “প্রথম শ্রেণীর আরোহীদের মধ্যে যখন মোহন আছে, তখন তাকে খুঁজে বার করা আদৌ কষ্টসাধ্য হবে না।” অন্য একজন যুবক বললে, “দসু মোহনকে আপনি চেনেন না বোলেই ও কথা বলতে সাহসী হয়েছেন, নইলে মোহনের অসাধ্য কর্ম কিছু আছে বলে তার জন্মশত্রু প্রসিদ্ধ চীফ ডিটেকটিভ ইনস্পেক্টার মিঃ বেকার পর্যন্ত অস্বীকার করেন না। সেবারে যখন মহারাজের বাড়ীতে চুরি করলে, তখন পুলিস রক্ষা করতে পারলে কী?” অন্য একটি ভদ্রলোক বললেন, “আয়ারলেসে বলেছে, প্রথম শ্রেণীতে মোহন চলেছে, নামের আদ্যাক্ষর যা পাওয়া গেছে, ‘P’ তাতে; ঐ নামের আদ্যাক্ষরে যে কয়টা নাম আছে, সেগুলোতে চোখ বুলুলেই ধরা যাবে বোলে আমার বিশ্বাস।” একজন যুবক বললে, “মোহন একা চলেছে!” আমি মৃদু হেসে বললুম, “ও কথাটা অবাস্তর। কারণ মোহনের মত নারীদ্বেষী পৃথিবীতে দ্বিতীয় আর নেই বললেও চলে।” মিস সোম সবিস্ময়ে বললেন, “নারী-দ্বেষী ? কেন নারী-দ্বেষী, মিঃ চন্দ ?” আমি হেসে জবাব দিলুম, “আমার ঠিক জানা নেই, মিস সোম! তারপর গলার স্বর নীচু করে বললুম, “নিশ্চয়ই সে আপনার মত নারী-রত্বের সন্ধান পায়নি বোলে।” দেখলাম, মিস সোমের মুখ গোলাপের মত টক্‌টকে লাল হয়ে উঠল এবং সঙ্গে সঙ্গে মুখখানি নত হয়ে গেল। একটি ভদ্রলোক আতঙ্কে অভিভূত হয়ে বললে, “সর্বনাশ হলো এবার। ধনে প্ৰাণে মারা যেতে এ জাহাজে উঠেছিলুম দেখছি।” ভদ্রলোকের কি হ’ল বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলুম, “আপনার কি হ’ল মশায়?” “আরে মশায়, আপনাদের কি! আমার ওপর ঐ হতভাগাটার যে জাতক্রোধ, আর যার জন মগের মুলুকে পালাচ্ছি, সেই ভয়ই আমার ঘাড়ে চেপে বসল। এই সব মানবতার শক্রকে ফঁাসি দেওয়া দরকার।’ (8 শঙ্কিত আবহাওয়া সত্ত্বেও অনেকে হেসে উঠলেন। একজন যুবক বললে, “চুপ করুন । মশায়। কে বলতে পারে, যাকে আপনি বার বার ফঁাসি লাগাবার হুকুম দিচ্ছেন, সেই মোহন আমাদের মধ্যেই নেই?” (S - o যুবকের কথা শুনে আমাদের সকলের মুখের হাসি চোলে গেল। ভদ্রলোক অভিভূত হয়ে বললেন, “না, না, আমি কি গালাগালি করতে পারি তার মত মহাপুরুষকে? আমরা গরীব লোক, যা দু'এক লাখ জমিয়েছি, তা’ আর কত টাকা? ছেলেপুলে রয়েছে, ভবিষ্যৎ রয়েছে, তাই বলছি—যা”দের বিশ, পঞ্চাশ, শ’ লাখ আছে তাদের যেন তিনি দয়া করেন, তবে দেখতে শুনতে এবং ধর্মেও ভাল হয়। নমস্কার! নমস্কার!” ভদ্রলোক কোন জবাব না দিয়ে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে উঠে গেলেন। আমি বললুম, “শুনুন আপনারা। মোহন যখন প্রথম শ্রেণীতে চলেছে, আর সে দেখতে ফরসা এবং একা চলেছে, আর তার নামের আদ্যাক্ষর ‘P’, তখন আমার কাছে