পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন եr:, দসু মোহন যে আমাদের মধ্যে রয়েছে—এই শঙ্কা আর একবার সকলের মনে গভীর ভাবে আলোড়ন তুললে। সকলের মুখে অনাগত বিপদের ছায়াপাত হ’ল। (5) আমরা দ্রুতপদে লেডী সান্ন্যালের কেবিনে গিয়ে দেখলুম, র্তার যথাসর্বস্ব চুরি হয়ে যায়নি। অসমসাহসিক দস্য র্তার মহামূল্য নেকলেস থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ হীরকগুলি এবং জড়োয়া গহনার মূল্যবান পাথরগুলি মাত্র চুরি করেছে, সোনার গহনায় হাত পর্যন্ত দেয়নি বা কয়েকশত মুদ্রার নোটও চুরি করেনি। এমন ভাবে বেছে হীরকগুলো তুলে নিয়েছে, তাতে দসু যে একজন মণিকারও তাতে কারও সন্দেহ রইল না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে দসু্য এমন ভাবে পরীক্ষা কোরে চুরি করতে সক্ষম হ’ল কি প্রকারে? লেডী সান্ন্যাল চা খেতে স্টেটরুমে গমন করেছিলেন, বিশ কি পাচশ মিনিট সময় মাত্র তিনি বাইরে ছিলেন, ইতিমধ্যে কেবিনের দ্বার ভেঙে ভিতরে প্রবেশ কোরে নিশ্চিন্ত মনে দস্যু মোহন বেছে বেছে শ্রেষ্ঠ পাথরগুলি চুরি কোরে বেরিয়ে গেছে। সারা জাহাজের আনন্দ-কোলাহল নিঃশেষে রুদ্ধ হয়ে গেল। এখনও দুদিন ও দুরাত্রি একই জাহাজে এমন ভীষণ দসু্যর সঙ্গে বাস করতে হবে জেনে আমাদের অস্বস্তির আর সীমা রইল না। পরদিন প্রাতঃকালে ক্যাপ্টেন প্রফুল্ল মিত্রকে ডেকে পাঠালেন। আমাদের মন হতে যেন একটা পাষাণ ভার হঠাৎ নেমে গেল। আমাদের মধ্যে কারও সন্দেহ রইল না যে, প্রফুল্ল মিত্রই ছদ্মবেশে দসু মোহন। প্রফুল্ল মিত্রকে ডেকে পাঠানোর অর্থই যে তাকে গ্রেফতার করা হ’ল, এ বিষয়ে আমাদের সন্দেহ ছিল না। লেডী সান্ন্যালের বাছাই করা ইরক অপহরণ দেখে, তা যে দসু্য মোহনের চিরপরিচিত ধারায় চুরি, তা আমাদের মধ্যে অনেকেই নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করেছিলাম। প্রথমতঃ জাহাজের মধ্যে চুরি কোরে চোরাই জিনিস গোপনে রাখা এক দুরূহ ব্যাপার। কারণ জাহাজের মূল্যের দ্রব্য লুণ্ঠন কোরে গোপন রাখা সম্ভব হবে—এই ভেবেইল্লেউ সান্ন্যালের মাত্র মূল্যবান পাথরগুলি যে চুরি করা হয়েছে, তাতে অনেকেরই সন্দেহ ছিল না। যা হোক, একটা বিষয়ে আমি লাভবান হলুম। প্রফুল্ল মিত্রের সুশ্রী, সুন্দর চেহারা মিস সোমের যে প্রশংস-দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল, তার গ্রেফতারে সে সম্ভাবনা চিরতরে রহিত হ’য়ে গেল। এখন আমি একা, একান্ত ভাবে রমাকে কাছে পাবো, চিস্তায় আমি অস্তরের অন্তর হতে দসু্য মোহনকে আশীর্বাদ করতে লাগলুম। যদি তার আগমন প্রচারিত না হতো, তা’ হ’লে এমন মধুময় সৌন্দর্যরাশিতে অংশীদার দিয়ে আমার জীবনের প্রথম ও নব-বসন্তের সমারোহে অপূর্ণতা রয়ে যেতো। মিস সোম আমার মুখের দিকে চেয়ে বললেন, “আমার মন ঠিক বুঝতে পেরেছিল । মিঃ চন্দ।” আমি বুঝতে না পেরে বললাম, “কি বুঝতে পেরেছিল, মিস সোম?”