পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন ఫి মিস সোম ক্ষণকাল দ্বিধা কোরে বললেন, “আমার বাবা আপনার কথা শুনবেন যখন, তখন দেখবেন, আপনি কিছুতেই সক্ষম হবেন না।” এই বলিয়া মিস সোম মৃদু শব্দে হেসে উঠলেন। আমি বললুম, “হাসলেন যে ?” মিস সোম বললেন, “হাসলুম—এমনিই!” একটু পরে পুনরায় বললেন, “সক্ষম হবেন কথার অর্থ কি, মিঃ চন্দ?” আমি হাসতে হাসতে বললুম, “হোটেলে থাকা আমি কোন সময়েই পছন্দ করিনে। যখন নিতান্ত বাধ্য হতে হব, তখন সক্ষম হব অর্থাৎ মনের সব আপত্তি দূর করতে বাধ্য হবো। বুঝেছেন?” ~. এমন সময়ে একটা গুঞ্জন ধ্বনি ডাইনিং হলের চারিদিকে উত্থিত হ’ল। দেখি, প্রফুল্ল মিত্র শির উচু কোরে খাবারের ঘরে প্রবেশ করছেন। তাকে দেখে, মিস সোমের মুখ কালো হয়ে উঠল। ভয় চকিত দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে তিনি যেন কি বলতে গেলেন, পারলেন না। অবশেষে প্রফুল্ল মিত্তিরকেও ছেড়ে দিলে! তবে দসু কে? এই শঙ্কায় সকলের মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল। আমাদের আহার শেষ হয়েছিল। প্রফুল্ল সকলের সঙ্গে দু-একটা কথা ক’য়ে যেমন আমাদের টেবিলের নিকট আসবার উপক্রম করলে, আমনি মিস সোম র্তার গভর্নেসের সঙ্গে দ্রুতপদে কক্ষ ছেড়ে বা’র হয়ে গেলেন। প্রফুল্ল মিত্রের প্রফুল্ল মুখ মলিন হয়ে উঠল। এক হিংস্র উল্লাসে আমি উৎফুল্ল হয়ে ভাবলুম, “যাক বাঁচা গেল। প্রফুল্ল মিত্রের জন্য রমর সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন হবার আমার আর কোন কারণ নেই!” আমি বললুম, “কি হ’ল, মিঃ মিত্ৰ ?” প্রফুল্ল আমার মুখের দিকে একবার তীব্র দৃষ্টিতে চেয়ে বললে, “হবে আর কী?” পিছন থেকে এক ভদ্রলোক বললেন, “বেশ মশায়, হবে আর কী, কি রকম ? আপনাকে কি জন্য গ্রেফতার করেছিল শুনি ?” - প্রফুল্ল গম্ভীর মুখে বললে, “ভুল কোরে মশায়, ভুল কোরে।” কিন্তু আমরা কেউই তার কথা সমর্থন করতে পারলুম না। আমরা অস্তরে অস্তরে প্রার্থনা করেছিলুম, যেন ভুল না হয়ে থাকে। এমন সময়ে প্রফুল্ল পুনরায় বললে, “আমার কাছে কাগজ-পত্র দেখে ক্যাপ্টেন নিঃসন্দেহ হয়ে আমাকে ছেড়ে দিয়েছেন। এইবার আমি দেখছি হতভাগ মাহ্নকে কুরআগোপন করতে . সক্ষম হয়।” o প্রফুল্ল কারও নিকট কোন সমর্থন না পেয়ে হল হতে বেরিয়ে গেল। একজন বললেন, “ক্যাপ্টেনের ছেড়ে দেওয়া ভুল হয়েছে এ আমি জোর গলায় বলতে পারি। অমন কাগজ-পত্র দসু মোহন হাজারে হাজারে তৈরী করতে পারে। না, দেখছি সকলের সর্বনাশ না কোরে আর ও নিশ্চিত্ত হবে না।” আমি চিন্তিত হয়ে পড়লুম। এইবার কার ওপর সন্দেহ হবে, কাকে গ্রেফতার করা হবে, কিছুই বুঝতে পারলুম না। প্রফুল্ল মিত্রের নামের আদ্যাক্ষর মিলে গেল, অত্যন্ত ফরসাও সে, একাও চলেছে, প্রথম শ্রেণীতেও চলেছে সে, অথচ তাকে ছেড়ে দেওয়া হ’ল, এর অর্থ কী বুঝতে পারলুম না। অপরাহুে আমরা যখন ডেকে জমায়েত হলুম, মিস সোম আমার অতি সন্নিকটে এসে