পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন :כי ס এরূপ তর্ক বাড়তে দেবার ইচ্ছা আমার আদে ছিল • কাবণ যুবকের আসল উদ্দেশ্য মিস সোমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা, তা আমি প্রথমেই বুঝতে পেরেছিলাম, সুতরাং আমি মিস সোমের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল; কিন্তু পরক্ষণেই নিম্প্রভ হয়ে গেল। বললেন, “যদি মোহনের সঙ্গে দেখা হ’য়ে যায় ?” আমি হেসে বললাম, “ভালই হয়। আলাপ করা যাবে। আপনি উঠুন।” মিস সোম উঠে দাঁড়ালেন। এমন সময়ে ছোট এক টুকরা টাইপ করা কাগজ, জাহাজের একজন কর্মচারী সকল যাত্রীদের হাতে বিতরণ কোরে গেল। আশ্চর্য হয়ে পড়লুম, মিঃ প্রফুল্ল মিত্র স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন, যে-কেহ দসু্যু মোহনকে গ্রেফতার করিয়ে দেবে তাকেই তৎক্ষণাৎ দেওয়া হবে। একজন হাসি মুখে মন্তব্য করলেন, “দস্য মোহন, দসু মোহনের গ্রেফতারকারীকে পুরস্কৃত করবেন।” মিস সোম মৃদু হাস্য মুখে বললেন, “আসুন, মিঃ চন্দ।” (8) অবিরাম গতিতে জাহাজ চলেছে। চারিদিকে জল আর জল। আকাশ চারিদিকে গোল হয়ে সমুদ্রের বক্ষের উপর নেমে এসেছে। মিস সোম সমুদ্রের দিকে চেয়ে উচ্ছসিত স্বরে বললেন, “যতবারই দেখি না কেন, এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য কখনও পুরাতন হয় না। নয় কি, মিঃ চন্দ?” আমি মিস সোমের পাশে দাঁড়িয়েছিলুম। কোমল-স্বরে বললুম, “যথার্থ বলেছেন আপনি।” মিস সোম বললেন, “এমন আনন্দময় ভ্রমণ এক দসু্যর জন্য এমন ভাবে নষ্ট হ’ল, ভাবতেও আমার কষ্ট হয়!” আমি পুলকিত হয়ে চিন্তা করলুম, আমার সঙ্গ কি তবে রমাকে আনন্দ দিতে সক্ষম হয়েছে? প্রকাশ্যে বললুম, “আমার সৌভাগ্যের আর অন্ত নেই, মিস সোম।” মিস সোম চমকিত হয়ে আরক্ত হয়ে উঠলেন। এমন সময়ে স্বয়ং ক্যাপ্টেন আমাদের সম্মুখে এসে অভিবাদন জানিয়ে বললেন, “বড়ই দুঃখের বিষয় মিঃ চন্দ যে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করেও না দসু, না অপহৃত অলঙ্কার আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি এক্ষেত্রে আমরা কি করি বলুন তো?” so (భొ আমি মৃদু হেসে বললুম, “দসু্যুর পূর্ণ নামের জন্য অয়ারলেস পাঠিয়েছেন?” ক্যাপ্টেন বিষগ্নমুখে বললেন, “সেও এক বিপদ। অয়ারলেস যন্ত্র এমন খারাপ হয়ে গেছে যে, এখন পর্যন্ত তা’ ঠিক হচ্ছে না। নইলে কোন কালে দসু মোহনকে গ্রেফতার করতে পারতাম।” মিঃ সোম বললেন, “সমস্ত জাহাজ অনুসন্ধান করেছেন?” “প্রত্যেকটি স্থান মিঃ সোম। সত্য কথা বলতে কী, এই অসমসাহসিক জাদুকর দসু্যর কথা কাগজ পত্রে অনেক পড়েছি, তা হলেও পূর্বে সব কথা বিশ্বাস করতাম না; কিন্তু এখন লোকটার ওপর আমার শ্রদ্ধা সহস্ৰগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাবছি, এমন একটা লোক যদি বিপথে না গিয়ে সুপথে থাকতো, তা হলে জগতের মহোপকার হতে পারতো?”