পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ 8 মোহন অমনিবাস আমি মৃদু হেসে তার কথা সমর্থন করলুম। বললুম, “তা’ হ’লে আমাদের দসু্যু মোহনের দয়ার উপর নির্ভর করা ছাড়া আর কোন গত্যস্তর রইল না ?” “আমরা যথাসাধ্য করছি, মিঃ চন্দ? আপনারা সকলে যে বিশেষ সাবধানে থাকবেন, এ আশা নিশ্চয়ই করতে পারি আমি।” ক্যাপ্টেন সেখান হতে চলে গেলেন। - মিস সোম অস্থির কণ্ঠে বললেন, “চলুন, আমরা ডেকে যাই, মিঃ চন্দ। আমার অত্যন্ত ভয় করছে।” আমরা ডেকে ফিরে এসে দেখলুম, সেখানে তুমুল তর্ক, যুক্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। সকলেই আছেন, কিন্তু প্রফুল্ল মিত্র ছাড়া। শুনলুম, তিনি নিজে অনুসন্ধানের কার্যে নিযুক্ত হয়েছেন। একজন বললেন, তিনি মিত্রকে ক্রু ও খালাসীদের সঙ্গে আলাপ করতে দেখে এসেছেন। মিস সোম বললেন, “আমার মনে হয়, মিঃ মিত্র যদি নির্দোষ-ই হবেন, তবে এমন আমার হাসি পেল রমার কথা শুনে। কারণ, বেচারাকে দেখে আহারের টেবিল থেকে রমা ও তার গর্ভনেস যে ভাবে উঠে গিয়েছিল, তা’ স্বচক্ষে দেখেও কোন যুবক কোন তরুণীকে আপ্যায়িত করতে আসতে পারে, আমার কল্পনাতীত ব্যাপার। তাছাড়া আর কি উপায় আছে? আমাকে নীরব থাকতে দেখে মিস সোম উৎকণ্ঠিত স্বরে বললেন, “আপনি কি ভয় পেলেন, মিঃ চন্দ ?” আমি হেসে বললুম, “না, মিস সোম। আমি ভাবছি, মিত্রের আসল উদ্দেশ্যটি কি? একদিকে পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে, স্বয়ং অনুসন্ধান লেগেছে, অন্যদিকে ক্যাপ্টেনের মুখে যা’ শুনলেন, তাতে কে যে দসু মোহন আর কে যে নয়, আমি তো আর ভাবতে পারি নে।” মিস সোম আয়ত দুটি চক্ষু তুলে বললেন, “তবে কি হবে, মিঃ চন্দ?” আমি এই ভয়াতুর কপোতীকে অভয় দেবার জন্য বললুম, আপনার ভাববার বিশেষ কোন কারণই নেই, মিস সোম।” একজন ভদ্রলোক চিৎকার কোরে বললেন, “ভরসাই বা কোথায়, মশায়? মোহন কারুকেই রেহাই দেয় না। শুনেছি, নারীর উপর তার বিজাতীয় ঘৃণা আছে, তা তিনি পরমাসুন্দরীই হোন, আর কুৎসিতাই হোন।” .۹ م.م( " আমার হাসি পেল। ভাবলুম, হতভাগ্য মোহন? যার নামে এমন সব কাহিনী প্রচারিত হয়, মানুষ নামের অযোগ্য সে। আমার মন এই ভেবেই সাম্ভুনা পেলে যে, মিস সোমের মত একটি অসামান্যা মেয়ের দেখা যদি তার ভাগ্যে ইতিপূর্বে সম্ভব হত তা হলে তা’র নিন্দাবাদে আকাশ-বাতাস এমন মুখরিত হতো না। আমাকে নীরব থাকতে দেখে মিস সোমের ভয় বৃদ্ধি পেলো। তিনি বললেন, “আচ্ছা দসু্যটার সম্বন্ধে আর কিছু জানেন আপনি, মিঃ চন্দ?” আমি কিছু বলবার পূর্বেই একজন যুবক বললে, “লোকটার একটু বিশেষত্ব আছে, মিস সোম। শুনি, ধনীলোকের ওপর তার বিজাতীয় ঘৃণা। কিন্তু কেন, তা আমি সবিশেষ অবগত নই। সে যত ধন ধনীদের মাথায় হাত বুলিয়ে অপহরণ করে, শুনেছি না কী তার শেষ কপদকটি পর্যন্ত গরীবদের কাজে বিলিয়ে দেয়।”