পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> o o মোহন অমনিবাস এমন ভীষণ সংবাদ শ্রবণ কোরে সকলেই সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলুম। সর্বনাশ! তবে দসু্যু কে? প্রফুল্ল মিত্রই কি তবে নিজেকে বেঁধে রেখে নতুন খেলা খেলে জানাচ্ছে যে, সে নিজে দসু্য নয়? আমাদের মধ্যে অনেকের দৃঢ় বিশ্বাস হ’ল যে, প্রফুল্ল মিত্রেরই কারসাজি এটা। কিন্তু গোঙানি শুনে জাহাজের যে একজন অফিসার তাঁকে বন্ধন মুক্ত করেছিলেন, তিনি বলেছেন যে, কোন মানুষ আপনাকে আপনি তেমনভাবে কিছুতেই বাঁধতে পারে না। তবে? তবে দসু কে? এই প্রশ্নই আমাদের মনে অবিরত উঠতে লাগল। ফলে সকলেই পরস্পর পরস্পরকে দসু বোলে ভাবতে লাগল। কে দস্য? আমার পাশে যে ভদ্রলোক শঙ্কিত বিহুল চোখে চেয়ে রয়েছেন, উনি? না একটু দূরে যে যুবক ভীত বিহুল হয়ে আপন সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলছেন, তিনি ? না ওঁর সঙ্গী? তা’ নয় ত’ কে ? - অবশেষে ব্যাপার এরূপ দাঁড়াল যে, বিশেষ পরিচিত, সন্দেহাতীত ব্যক্তি ব্যতীত কেউ কা’রও সঙ্গে বাক্যালাপ পর্যন্ত করতে সাহসী হ’ল না। এখনও একটা দিন একটা রাত্রি জাহাজে থাকতে হবে। ইতোমধ্যে কি যে হবে, আর কি যে হবে না, তার কোন নিশ্চয়তাই আমাদের মধ্যে রইল না। একজন বললেন, “মোহন যে শুধু ঐ কটা টাকা কয়েকটা হীরার টুকরা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে, তা বিশ্বাস হয় না। এবার নিশ্চয়ই রক্ত স্রোতে জাহাজ ভাসিয়ে দেবে। কারণ মোহন দস্য যে কি রকম ভয়ঙ্কর নীচ, তা আমার জানা আছে।” ভদ্রলোকের কথা শুনে সকলের মুখে আতঙ্ক চিহ্ন পরিস্ফুট হয়ে উঠল। জাহাজের ক্যাপ্টেন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। তিনি হুকুম দিলেন যে, যেমন কোরেই হোক, এই দস্যকে গ্রেফতার করতে হবে। তিনি ও তার সমস্ত কর্মচারী মিলে জাহাজের সমস্ত গুপ্ত স্থান, এমন কি জাহাজের তক্তা পর্যন্ত তুলে তুলে অনুসন্ধান করলেন। কিন্তু কোথায় দস্যু মোহন ? আবার নতুন সংবাদ এলো, গত রাত্রে ক্যাপ্টেনের সোনার ঘড়ি চুরি হয়ে গেছে। একে তো ক্যাপ্টেন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন, তার উপর স্বয়ং ঘড়ি খুইয়ে উন্মাদেরও অধম হয়ে উঠলেন। তার চিৎকারে তার হুকুমের পর হুকুমে কর্মচারীদের জীবন দুর্বই হয়ে উঠলেও তারা প্রাণপণে দসু্যর অনুসন্ধানে রত হ’ল। ് ox", মোহনের নতুন নতুন কীর্তিতে আমার পক্ষে এই সুবিধা হ’ল যে আমি রমাকে একান্ত নিকটে পেলুম। তিনি লতার মত আমাকে অবলম্বন কোরে একান্ত নিৰ্ভয়ে আপনাকে ছেড়ে দিলে আমি নানা রকমে তাকে সাত্ত্বনা দেবার জন্য আমার মনের কথা, মনের আবেদন নানা ছলে নানা ভাবে তা’র কানের মধ্যে গুঞ্জন-ধ্বনিতে ঢালতে লাগলুম। ভীতা কপোতীর মত দুই পক্ষ অবশ কোরে রমা আমার মুখের দিকে চেয়ে রইলেন। এই সময়ে রমা বললেন, “আশ্চর্য শক্তি এই মোহনের। লোকটার জন্য এত ভয় ও ঘৃণা হলেও সময়ে সময়ে শ্রদ্ধার ভারে অবনত হয়ে পড়তে হয়।” বড় বড় দুটি চক্ষু মেলে রমা বললেন, “কেন, জিজ্ঞাসা করছেন? জাহাজের এই স্বল্প পরিসর জায়গার মধ্যে উপরি উপরি এতগুলো কাণ্ড কোরেও যে লোক অলক্ষ্যে অদৃশ্য হয়ে থাকতে পারে, তা’র মত ক্ষমতাশালী শক্তিমানকে শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছা যায় না? সব