পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই দুইজাতি সম্প্রীতির সহিত বসতি করিয়াছিল। এই ভাবে পঞ্চদশ শতাব্দী অতিবাহিত হইল। ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে দেখা গেল, হুসেন শাহ গৌড়ের বাদশাহ। সমগ্র বঙ্গে সে এক সুবর্ণযুগ ; শুধু যে গৌড়ের লোকে তখন স্বর্ণপাত্রে পানভোজন করিত, তাহা নহে; সমগ্র বঙ্গের লোক তখন সমৃদ্ধি শাস্তির মুখ দেখিয়াছিল; প্রজাবৰ্গ মুথে বাস করিত। সে সুখের অনুভূতি তখন যত উক না হউক, যখন সুলতান হুসেন শাহের মৃত্যুর পর, রাজ্যমধ্যে নানা বিপর্যায় ও অশান্তি আরব্ধ হইয়াছিল, তখন লোকের পূৰ্ব্বস্তৃতি জাগিত এবং “সে হুসেন শাহের আমল আর নাই” বলিয়া সকলে দুঃখ-প্রকাশ করিত। কয়েকটি ঘটনায় হুসেনী যুগ বিখ্যাত করির রাখিয়াছে। তিনি জাতিধৰ্ম্মনিৰ্ব্বিশেষে গুণের মর্যাদা রাখিতেন, শিল্পসাহিত্যের উৎসাহ দিতেন ; বিশেষত: তখন মহাপ্ৰভু চৈতন্যদেবের আবির্ভাবে যে নবীন ধৰ্ম্মজীবন জাগিয়াছিল, দেশময় এক তীব্র আন্দোলন উঠিয়াছিল, ভক্তির ধারায় ধৰ্ম্মের ঔদাসীন্ত ও জীবনের শুষ্কতা বিলীন হইয়া যাইতেছিল, হুসেন শাহ প্রকৃতপক্ষে সে স্রোতের বিপক্ষে দণ্ডায়মান চন নাই। সে স্রোতে র্তাহার প্রধান অমাত্য ও প্রবীণ কৰ্ম্মসচিব রূপ-সনাতনকে ভাসাষ্টয়া লইয়া গিয়াছিল, আরও কত লোককে যে বৈষয়িকতাকে বিষবৎ পরিত্যাগ করাষ্টয়া ঘরের বাহির করিয়াছিল, তাহার ইয়ন্ত নাই। হুসেন শাহ প্রথম প্রথম স্রোতের গতি না বুঝিয়া বাধা দিবার উপক্রম করিলেও, অবশেষে তাহাতে নিবৃত্ত হইয়া নূতন বস্তার দর্শকমাত্র হইয়াছিলেন ; তবে তাহার স্বশাসনের শান্তি এবং দেশময় লোকের মুখসমৃদ্ধি যে ধৰ্ম্মবৃদ্ধির পরিপোষকষ্ট কষ্টয়াছিল, তাছাতে সন্দেষ্ট মাত্র নাই । যশোহর-খুলনা হইতে রাজধানী গৌড় অনেক দূর। গৌড়ে কোন রাজনৈতিক কলঙ্গ উপস্থিত হইলে, এ দূরবর্তী দেশের কোণে তাহার কোন সংবাদ পৌছিত না। এই জন্যই হুসেনের পুত্র নসরং পিতার জীবদ্দশায় বিদ্রোহী হইয় এই যশোহরখুলনার একপ্রান্তে, বর্তমান বাগেরহাট অঞ্চলে আসিয়া কিছুদিন রাজার মত বাস করিয়াছিলেন এবং এমন কি বাগেরগট (খলিফতাবাদ) ও মহম্মদপুর (মহম্মদাবাদ) হইতে নিজ নামে মুদ্র প্রচলন করিয়া প্রজাশাসন করিয়াছিলেন। সে সব কথা

  • Catalogue of Coins in the Indian Museum, Vol. II Part II pp. 177-8, Nos 211-12, 116-19.