পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গে বারভুঞ ९४ মোগলের বগুত স্বীকার করিলেও যখন স্বীয় প্রদেশে প্রতাপান্বিত ছিলেন, তখন তাহারা নিজের ভূঞা নাম ধারণ করুন বা না করুন, তাহাদিগকে ভুঞা পৰ্যায়ভূক্ত না করিয়া উপায়ান্তর কি আছে ? আকবরের বহু পরে যে মানবিক এ দেশে ভ্রমণার্থ আসিয়াছিলেন, তিনিও উড়িষ্যা ও হিজলীতে ভূঞা রাজ্য দেখিয়া গিয়াছিলেন। অপর পাঁচ জন ভুঞার মধ্যে পূৰ্ব্ববঙ্গের গাজীগণ রাজনৈতিকক্ষেত্রে দাড়ান নাই। বিষ্ণুপুরের হাম্বীর মল্ল বহুদিন পর্য্যন্ত স্বাধীনতা রক্ষা করিলেও যশোহরের সহিত র্তাহার বিশেষ কোন ঘনিষ্টতার পরিচয় পাই না। পূৰ্ব্ববঙ্গীয় বিদ্রোহ দমনের জন্ত মোগল বাহিনীর যে যাতায়াত চলিতেছিল, তিনি একপ্রকার তাহার দর্শকমাত্র ছিলেন। অবশিষ্ট তিনজন অর্থাৎ তাহিরপুর, সাতোড় ও পুটীয়ার ভুঞাগণ উত্তরবঙ্গে প্রাধান্ত লাভ করিয়াছিলেন সত্য, এবং ঘোড়াঘাটের পলায়িত পাঠানের সহিত র্তাহাদের গুপ্ত সন্ধি থাকাও অসম্ভব নহে, কিন্তু মোগলের সেদিকে তেমন মনোযোগী হয়েন নাই ; কারণ নিম্ন বঙ্গের বিদ্রোহ-তরঙ্গ যখন মোগলের নূতন রাজধানী পর্যন্ত পৌছিতেছিল, তখন বঙ্গরাজ্য করায়ত্ত রাখিতে, নিম্ন-বঙ্গের দিকেই অধিক চেষ্টার প্রয়োজন হইয়াছিল। বিশেষতঃ উত্তর-বঙ্গের ব্রাহ্মণ ভুঞাত্রয় বঙ্গের স্বাধীনতাকে মূলমন্ত্র স্থির না করিয়া সামাজিক প্রতিপত্তির দিকে অধিক মনোযোগী হন। সমাজপতি বলিয়াই তাহিরপুরের কংসনারায়ণ সৰ্ব্বত্র পূজিত হইতেন। এক্ষণে আমরা শেষোক্ত । ছয় জন ভুঞার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিতেছি। এতদ্বাতীত প্রমাণাভাবে পুটীয়, তাহিরপুর ও দিনাজপুর পরিত্যাগ করিয়াছেন । যুক্ত আনন্মনাথ রায় তৎপ্রণীত ‘বীরভূঞা' নামক পুস্তকে কত ভুঞারই উল্লেখ করিয়াছেন, তস্মধ্য হইতে ১২ জন বাছির লওয়া দুষ্কর। মোট কথা সে পুস্তকে ঐতিহাসিকের মত কোন বিচার বা শৃঙ্খল। কিছুই নাই। যুক্ত কালীপ্রসন্ন বলোপাধ্যায় নবাবী আমলের “বাঙ্গালার ইতিহাসে” ( ৪৮৩-৪ পৃঃ, বারভুঞার উল্লেখ করিয়াছেন, কিন্তু স্পষ্টভাবে নাম দেন নাই। ইযুক্ত বাবু হরিসাধন মুখোপাধ্যায় তৎপ্রণীত “কলিকান্ত সেকালের ও একালের" নামক বিরাট গ্রন্থে বহির্ভুঞার তালিকা দিয়াছেন। তাছাতে আমাদের তালিকার প্রথম ৯ জনের নাম আছে। ভাওয়াল ও চাদপ্রতাপ পৃথক্ভাবে উল্লেখ করিয়া আর একটি সংখ্যা বৃদ্ধি করিয়াছেন। এবং দিনাজপুরের গণেশ রায় ও পুর্শিয়ার অজানিত রাজাকে অবশিষ্ট ভূঞা বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন ।