পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

βb" যশোহর-খুলনার ইতিহাস - জনশ্রুতিমুখে রঞ্জিত ভাষায় কতক প্রকাশ পায় ; বংশবিবরণে এবং ব্ৰতকথা ও উপকথায় তাহদের কতক সন্ধান পাওয়া যায়। বর্তমান যুগের ঐতিহাসিককে এই লুকানো মাণিকের উদ্ধার সাধন করিতে হইবে। নতুবা বঙ্গের সর্বাঙ্গীন ইতিহাস আবিভূত হইবে না। রাজনৈতিক বিষয়ের প্রসঙ্গে আমরা মুসলমান ঐতিহাসিকগণের অনেক গ্রন্থ প্রামাণিক ধরিয়া লই বটে, কিন্তু সে বিষয়েরও অন্ত পক্ষের কথা থাকিতে পারে। সেই কথার সন্ধান লইয়া তাহার সহিত পারসীক গ্রন্থের প্রামাণিকতার সামঞ্জস্ত করিয়া নুতন যুগের ইতিহাস গঠন করিতে হইবে । বৈদেশিক ভাষায় লিখিত কোন গ্রন্থে ঘটনাবিশেষের অবতারণা না দেখিলেই তাহাকে উড়াইয় দেওয়া চলিবে না। পারসীক গ্রন্থের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ পুস্তকগুলিতে প্রতাপের নামোল্লেখ নাই, তাহ বলিয়া কি তাহাকে অস্তিত্বশূন্ত কল্পনা করিতে হইবে ? আমাদের যশোহর-খুলনা প্রতাপাদিত্যের অস্তিত্বে পূর্ণ এবং তাহার বীরত্ব-প্রতাপে ধন্ত। তাহার দানধৰ্ম্ম ও পূজা-ভক্তির কথা এদেশে প্রবাদবাক্যে পরিণত হইয়াছে। প্রতাপের যুগে দক্ষিণবঙ্গের জীর্ণশীর্ণ দেহে নবশক্তি সঞ্চারিত হইয়াছিল, বঙ্গপতির প্রকৃতি ও ব্যবসায় পরিবর্তিত করিয়া দিয়াছিল। তাহার অভিব্যক্তি এখনও আছে ; এখনও এদেশের অঙ্গে অঙ্গে তাহার প্রমাণ চিহ্ন বর্তমান; আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, যশোহর-খুলনা “প্রতাপময়”। এদেশের সেই প্রতাপময়তার সজীব আভাস দিবার জন্ত আমরা প্রাণপণে চেষ্টা করিব । - - তবে সেই চেষ্টা বড় কঠিন চেষ্টা । সমসাময়িক পারসিক বা অন্ত বৈদেশিক গ্রন্থে যেটুকু প্রমাণ বা ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তাহারই আলোকে পথ দেখিয়া লইতে হইবে। দেশীয় সাহিত্যে, ঘটককারিক বা পুথিপত্রে, প্রাচীন দলিলাদি বা স্বল্পসংখ্যক শিলালিপিতে যেটুকু তথ্য পাওয়া যায়, সাবধানে তাহার সদ্ব্যবহার করিতে হইবে। সামাজিক ইতিহাস বা বংশ বিবরণে যে সকল ঘটনার ঐতিহাসিকতা সপ্রমাণ হয়, তাহার সন্ধান লইতে হইবে। প্রচলিত প্রবাদ বা জনশ্রুতির মূলে যেটুকু সত্য নিহিত থাকিতে পারে, সহিষ্ণুতার সহিত তাহার সমুদ্ধার করিতে হইবে। সঙ্গে সঙ্গে প্রতাপাদিত্যের রাজধানীর সন্নিকটে বা দেশের নানাস্থানে যে অসংখ্য কীৰ্ত্তিচিহ্ন আছে, যে সকল মন্দির, মসজিদ, দুর্গ বা অট্টালিকাদির ভগ্নাবশেষ এখনও সিক্তবাত নিম্নবঙ্গে আত্মরক্ষা করিতে পারিয়াছে,