পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যশোহর-খুলনার ইতিহাস। مb را \ বলিয়া শিকারীরাও সে দিকে যায় না। সমুদ্রের দিক্ হইতে এ সব স্থান নিকটবৰ্ত্তী বলা যায়, কিন্তু সে দিক্ হইতে ষ্টীমার লইয়া নয়ন চরিতার্থ করিবার অভিলাষে এই বনে ভ্ৰমণ করিবার প্রবৃত্তি বা সুযোগ অভি অল্প লোকেরই হইতে পারে। সাধারণতঃ সেখানে শিকারী যায় না, কাঠুরিয়া যায় না, সুতরাং সে প্রদেশের সংবাদ সংগ্রহ করা অতীব কঠিন। সুন্দরবনের এই অজানিত প্রদেশ পার হইতে পারিলে সমুদ্রের কুলে যাওয়া যায় ; তখন সেই তরঙ্গাহত বেলাভূমির অপূৰ্ব্ব দূতে মানবমাত্রের চিত্ত পুলকিত করে এবং সঙ্গে সঙ্গে নানা স্থানে বিভিন্ন দেশীয় মৎস্ত-ব্যবসায়িগণের অসংখ্য আবাস-শ্রেণী দেখিয়া বিস্মিত হইতে হয়। পরের মুখের কথা শুনিয়া কোনও স্থানেরই বিশেষ বিবরণ দেওয়া যায় না, বিশেষতঃ সুন্দরবনের। সেখানে যাহারা সৰ্ব্বদা যাতায়াত করে, তাহার নিরক্ষর কাঠুরিয়া। তাহার কোন স্থানই চক্ষু লইয়া দেখে না। যাহা দেখে, তাহাও এত অতিরঞ্জিত করিয়া, অসম্ভব কথায় ও অপদেবতার গল্পে পূর্ণ করিয়া বলে যে, তাহদের কথা বিশ্বাস করা অতীব কঠিন। সুন্দরবন এক মন্ত্র তন্ত্রময় রাজ্য ; কাষ্ঠদেবতা, বনদেবতা, বনবিবি এ দেশের রাজ্যেশ্বরী ; গাজী কালুর কথা, চম্পাবতীর কথা, পাচপীরের কথা, এমন কত উপকথায় যে এ অঞ্চলের ইতিকথা বিষমভাবে বিজড়িত, তাহা বলিবার নহে। সহিষ্ণুত রক্ষা করিয়া এ সম্বন্ধে নানা অবাস্তর ও অবাস্তব কথায় অবিরত “হু” দিতে না পারিলে সত্য মিথ্য কোন গল্পই শুনিতে পারা যায় না। সংযত শ্রোতাকে বহু কথা শুনিয়া অবশেষে তুষরাশির মধ্য হইতে তণ্ডুলকণা সংগ্রহের মত, বহুকষ্টে কিছু কিছু সার সংগ্ৰহ করিতে হয়। অনেকস্থলে আমাদিগকেও তাঁহাই করিতে হইয়াছে। তবে সেভাবে যে তথ্য পাইয়াছি স্বচক্ষে পরীক্ষা না করিয়া তাহ লিপিবদ্ধ করি নাই। আমরা যে সকল তথ্য প্রকাশ করিব, তাহার অধিকাংশই স্বচক্ষে দেখিবার ফল, অবশিষ্ট বিশেষ সতর্কতার সহিত বিশ্বস্ত শিক্ষিত লোকের নিকট হইতে সংগৃহীত। প্রকাশিত বিবরণী পৰ্য্যাপ্ত নহে সত্য, কিন্তু তাহার সত্যতা সম্বন্ধে সন্দেহ করিবার কোন কারণ নাই । পূৰ্ব্বে বলিয়াছি আমাদের বিশ্বাস এই যে সুন্দরবনে দীর্ঘকালব্যাপী রুক্তি ছিল। সে বসতির চিহ্ন এখনও আছে। সুন্দরবনের এক গৌরবের নিছিল,