পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম পরিচ্ছেদ-সুন্দরবনে মনুষ্যাবাস। ማm পুরাতন পুষ্করিণী। এ পুষ্করিণীর জল অতি মিষ্ট। এখন সুন্দর বনের কোন কোন স্থানে শাসনকেন্দ্র (coupe ) স্থাপন করিয়া, সেখানে আফিস ও কৰ্ম্মচারিগণের বাসস্থান স্থির করিতে গিয়া, পানীয় জলের জন্য পুষ্করিণী খনন করিবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোথাও পুষ্করিণীতে ভাল জল হয় না। অথচ উপরোক্ত পুষ্করিণীতে উৎকৃষ্ট জল পাওয়া যাইতেছে ; বহুদূর হইতে লোক আসিয়া এ পুকুর হইতে জল লয় । গ্রীষ্মকালে লোকে নৌকায় করিয়া জল লইয়া যায়। এইরূপে চাঁদখালির হেঙ্কেল পুষ্করিণী, বেদকাশীর দীঘি, আমাদির কালিকা দীঘি প্রভৃতি প্রাচীন জলাশয়গুলির জল সুমিষ্ট । ইহা হইতে দুইটি অনুমান হয় ; সম্ভবতঃ (১) সুন্দর বনের মৃত্তিকারই সাধারণ অবস্থার পরিবর্তন হইয়াছে, (২) অথবা তখন লোকে পরীক্ষা করিয়া স্থান দেখিয়া পুষ্করিণী খনন করিত। এই দ্বিতীয় অনুমান ঠিক নহে ; কারণ বহুস্থানে লোকের বসতি চিহ্ন পাওয়া যাইতেছে ; পানীয় জলের ব্যবস্থা না হইলে বসতি হয় না ; প্রকৃত পক্ষে যেখানে লোকের বসতিছিল, সে খানেই পুষ্করিণীর অস্তিত্বের প্রমাণ আছে, সুতরাং সুন্দরবনের সাধারণ অবস্থা-বৈপরীত্য ব্যতীত আর কিছু বলা যায় না। প্রতাপ নগর হইতে উত্তরে ভালুকা পরগণার মধ্যে বিছট নামক গ্রাম । এখানে খোলপেটুয়া নদীর উপরই একটি প্রকাও ডক ( dock ) বা জাহাজনিৰ্ম্মাণস্থান রহিয়াছে। এই জাহাজ ঘাট কোনকালে কাহার দ্বারা খনিত হইয়াছিল, তাহ জানিবার উপায় নাই। দুইপাশ্বে দুইটি ১০১২ হাত উচ্চ সুবিস্তৃত মাটর টিপি এবং মধ্যস্থলে নদীর সহিত সম্মিলিত খাত রহিয়াছে। মাটর ঢিপি দুইটির দৈর্ঘ্য এখনও প্রায় ১২৫০ ফুট আছে। এই ডকের ভিতর উত্তর পশ্চিমপ্রান্ত হইতে একটি ৩০ হাত প্রশস্ত রাস্তা প্রায় একমাইল দূরবর্তী “বাণিয়াপুকুর” নামক একটি ৯ বিঘা জলাশয়যুক্ত দীঘির কুল পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। সম্ভবতঃ এখানে বণিক্‌ বা সওদাগর জাতীয় ব্যবসায়িগণের নিবাস ছিল এবং ডকে তাহাদের জাহাজ নিৰ্ম্মাণ হইত। পুকুরের সন্নিকটে কয়েক স্থানে ইষ্টকের চিহ্ন পাওয়া যায়। ডকের ভিতর হইতে যে খাল বাহির হইয়া গিয়াছে, সম্ভবতঃ তাহার মধ্যে এককালে নানাজাতীয় তরণী সজ্জীভূত থাকিত। এই খালের নাম কুমারখালি। পার্শ্বে ডকের উত্তরপূৰ্ব্ব পাহাড়ের নিয়ে বহুদূর পর্যন্ত রাশীকৃত চাড়া বা মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশদ্বারা কুস্তকারদিগের বাড়ীর পরিচয় আছে। এই