পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপবঙ্গেদ্বীপের প্রকৃতি। $86. পাঁচটি নদীই এই উভয় জেলার সভ্যতা ও প্রতিভার বিকাশপথ। কি রাজনৈতিক প্রাধান্ত, কি সামাজিক প্রতিপত্তি, কি ধৰ্ম্মভাবের উন্মেষ বা বিদ্যার গৌরব—যে ভাবেই ধরা যায়, এই পাঁচটি নদীই অতি প্রাচীন যুগ হইতে এদেশের যাহা কিছু উন্নতি বা সমৃদ্ধির প্রকৃত কারণ। প্রতাপাদিত্য, সীতারাম, খাজাহান আলি, সত্রাজিৎ বা মুকুটরায় সকলেই এই নদীর কুলেই ক্রীড়াক্ষেত্র করিয়াছিলেন ; কুশদ্বীপ, যশোর, কুমির, বাঘুটিয়া, জঙ্গলবাধাল, সেনহাট বা সেখহাটি, লক্ষ্মীপাশা, সিঙ্গিয়া, বা সত্রাজিৎপুর, ইতিনা বা মল্লিকপুর-উচ্চজাতীয় ব্যক্তিবর্গের প্রধান প্রধান সমাজকেন্দ্র এই কয়েকটি নদীর কুলে অবস্থিত। এই কয়েকটি নদীর কুলেই পণ্ডিতের সমাজ, সাধকের লীলাক্ষেত্র, বিদ্বানের লীলাস্থল এবং কবির জন্মভূমি। নদীই এদেশের আদিম অধিবাসের চিহ্নস্বরূপ, নদীই এদেশের উন্নতির মুলীভূত এবং নদীর পতনই এদেশের অধঃপতনের কারণ । - পঞ্চমতঃ নদীমাতৃক দেশের অধিবাসীর পূর্ণ প্রকৃতিই যশোহর লোকের চরিত্রে দেখা যায়, আচার ব্যবহার ও কৰ্ম্মজীবনে প্রতিফলিত হয়। এ অঞ্চলের লোক একটু অধিক মৎস্তাশী, তাহারা মৎস্ত ধরিতে, প্রত্যহ একাধিকবার স্নান করিতে, সন্তরণ করিতে সাধারণতঃ সুদক্ষ। নৌকাযানের মত যান নাই, ইহা এদেশে একটি সাধারণ প্রবাদবাক্য। অন্ত দেশের লোকে ইহার মর্থ তেমন বুঝে না ; কিন্তু এখানে লোকে সুবিধা পাইলেই নৌকায় ভ্রমণ করিতে ভালবাসে। নানাবিধ নৌকা গঠনে, তরঙ্গসস্কুল নদীবক্ষে নৌকাচালনে, সাধারণ নাবিকতা ও নৌযুদ্ধে এদেশের লোকে বিশেষ পারদর্শী। পূৰ্ব্বকাল হইতে এতদেশীয় বড় লোকের দুই একখানি স্বন্দর নৌকা রাথিতে যত্নবান হন ; এদেশে কতকগুলি যাযাবর জাতি আছে, তাহার নৌকার মধ্যেই আপনাদের ঘর বাড়ীর ব্যবস্থা করিয়া নিত্য নূতন স্থানে যাতায়াত করে। এ অঞ্চলের লোকের ধারণা এই ষে যেখানে নদী নাই, সেখানে বাস করিড়ে নাই। লোকে সব ত্যাগ করিতে পারে, নীর মায়া ত্যাগ করিতে পারে না। এই নদীমাতৃক দেশের অধিবাসীর নিকট নদী বড় প্রিয় বস্তু ; দেশমাতৃকার স্তম্ভধারারূপিণী নদী প্রবাসীয় মনে কি 3