পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৌদ্ধ সংঘারাম। ૨૭ (? হইতে গৃহীত হইয়াছিল। যে স্থানে নদীর কূলে নিকটে ভগ্ন অট্টালিকা ও বিস্তৃত সমুচ্চ প্রান্তর ছিল, নীলকরগণ সেইস্থানে প্রবল প্রতাপে কুঠি নিৰ্ম্মাণ করিয়া ব্যবসায়ে আত্মসমর্পণ করিতেন। ইউয়ান চোয়াং এর বর্ণিত ৩৯টি সংঘারামের মধ্যে যশোহর-খুলনায় যে গুলি ছিল, তাহার ভাগ্য সম্বন্ধে চিস্তা করিবার কি কিছুই নাই ? বাগের হাটে যে বৌদ্ধ সংঘারাম ছিল, আমরা তাহার আরও প্রমাণ দিব। বাগেরহাট হইতে বর্তমান খুলনা পর্যন্ত ২০২১ মাইল স্থানে বহুগ্রামে যোগী জাতির বাস রহিয়াছে। বাগের হাটের সন্নিকটে যোগীদহ পুকুর এবং কিছুদূরে যোগীখালি ঐ একই প্রসঙ্গের অবতারণা করে। যোগীদিগের চরিত্র, রীতিনীতি, ও ধৰ্ম্মমত হইতে আমরা প্রমাণ করিব যে তাহার। সকলেই বৌদ্ধ। গন্ধবণিক, ভড়ং, এমন কি নিম্নশ্রেণীর কায়স্থ প্রভৃতি এই প্রদেশের আদিম অধিৰাসিগণও বৌদ্ধমতাবলম্বী ছিল। আমরা দেখাইব দেশীয় অনেক প্রবাদবাক্য ইহাদের অনেক প্রাচীন কাহিনী অভিব্যক্ত করে। নিশ্চয়ই ইহাদের কোন প্রধান ধৰ্ম্মস্থান বা সংঘারাম ছিল, এবং তাঁহা বাগেরহাটে বা তাহার সন্নিকটে নদীর এপারে বা ও পারে কোথায়ও ছিল বলিয়া মনে হয়। এ সম্বন্ধে আরও একটি প্রত্যক্ষ প্রমাণ আছে। খাজাহান ১৪৫০ খৃষ্টাব্দে বা তাহার প্রাক্কালে যখন বাগেরহাটে তাহার সমাধিমন্দিরের নিকটে একটি বহু বিস্তৃত পুষ্করিণী খনন করাইতেছিলেন, তখন কয়েক হাত মাটীর নিয়ে একখানি প্রকাণ্ড কৃষ্ণপ্রস্তরের বৌদ্ধ প্রতিম পান। প্রতিমাখানি উত্থিত হইলে উহা খাজাহান মহেশচন্দ্র ব্রহ্মচারী নামক একজন ব্রাহ্মণকে দান করেন। ব্রাহ্মণ উছা লইয়া গিয়া বাগেরহাটের ৪ মাইল দূরে শিবপুর নামক স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেন। তদবধি উছা সেই স্থানেই আছে ; কিন্তু বুদ্ধরূপে পূজিত না হইয়া শিষরূপে পূজিত হইতেছে। সেই জন্যই গ্রামের নাম হইয়াছে শিবপুর। যে বাটতে মূৰ্ত্তি আছেন, তাহার নাম শিববাড়ী। এই স্থানে শিবচতুর্দশীতে মেলা হয় ; অহিংসা যাহার ধৰ্ম্মমতের প্রাণস্বরূপ, তাহাকে স্বচ্ছদে কালভৈরব কল্পনা করিয়া তাহার উদ্দেশ্যে ছাগ বলি দেওয়া হয়। বৌদ্ধ মতের এতদপেক্ষ আর কত পরাজয় হইতে পারে? কিন্তু তবুও একটি আনন্দের কথা আছে। প্রস্তরের গুণে ও মাধুর্য্যে হিন্দুর হাতে তাহ নিষ্ট