পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९२२ যশোহর-খুলনার ইতিহাস । দীক্ষিত হন। লক্ষ্মণ সেন পরম ভক্ত হিন্দু ছিলেন। পিতা পুত্রের রাজত্ব কালে তাহদের রাজ্যমধ্যে তন্ত্রোক্ত দেবদেবী মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মিত হইয়া প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। এখনও বহুস্থানে এই সকল মূৰ্ত্তি বৰ্ত্তমান রহিয়াছে। ইহা ব্যতীত আরও কত সহস্র মূৰ্ত্তি বিধৰ্ম্মীর অত্যাচারে ও দৈশিক বিপ্লবে কতক বিনষ্ট কতক ভূপ্রোথিত বা নদীগর্ভগত হইয়াছিল, তাহার ইয়ন্ত নাই। যশোহরখুলনার সর্বত্র এই সকল মূৰ্ত্তি এখনও দেখিতে পাওয়া যাইতেছে। এই সকল মূৰ্ত্তির কতক ঠিক এই যুগেই নিৰ্ম্মিত হইতে পারে, কতক পরবর্তী যুগে সেন রাজগণের মূৰ্ত্তির অনুকরণে নিৰ্ম্মিত হওয়া বিচিত্র নহে। এই সকল মূৰ্ত্তির মধ্যে চতুভূজ বিষ্ণুমূৰ্ত্তি, গণেশমূৰ্ত্তি এবং নানা জাতীয় তন্ত্রোক্ত দেবীমূৰ্ত্তিই প্রধান। * চতুভূজ বাসুদেব প্রভৃতি চতুৰ্ব্বিংশতি প্রকার বিষ্ণুমূৰ্ত্তি মধ্যে অনেক প্রকার মূৰ্ত্তি যশোহর-খুলনায় আছে। শঙ্খচক্ৰগদাপদ্মের স্থাপনাভেদে এই বিষ্ণুমুক্তি সকল বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হইয়াছে। । ইহার অধিকাংশ মূৰ্ত্তিই পাযাণময়ী ; স্থানে স্থানে দুই একটি পিত্তল বা অন্য ধাতু নিৰ্ম্মিত মূৰ্ত্তিও পাওয়া যায়। এখানে আদর্শস্বরূপ যে একটি বিষ্ণুমূৰ্ত্তির চিত্র প্রদত্ত হইল, উহার নাম শ্ৰীধর বা দামোদর। এই মুক্তিটি কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে মহেশ্বরপাশ নিবাসী শ্ৰীযুক্ত দুর্গাদাস মজুমদার মহাশয়দিগের বাড়াতে একটি পুষ্করিণী খনন কালে ৮১, হাত মৃত্তিকার নিম্নে প্রাপ্ত হওয়া যায়। উহা এক্ষণে ঐ গ্রামনিবাসী শ্ৰীগোবিন্দচন্দ্র ভদ্রের বাটতে পূজিত হইতেছে। সেনরাজগণের পূৰ্ব্বে এতদঞ্চলে মূৰ্ত্তিদ্বারা গণেশ পূজা ছিল না। ভারতবর্ষের অন্যত্র আবহমান কাল এই গণেশ মূৰ্ত্তির পূজা প্রচলিত আছে। কিন্তু বঙ্গদেশে সেনরাজগণের আমলেই—উহ! প্রচলিত হয়। আবার সে রাজত্বের শেষেই উহার বিলোপ হইয়াছে। গাণপত্য মত এদেশে নাই। ইঙ্গদ্বারা বুঝা যায়, গণপতি মূৰ্ত্তি এ অঞ্চলের অধিবাসিগণের অন্তঃকরণে কোন স্থায়ী ভক্তিভাবের প্রতিষ্ঠা করিতে পারে নাই ।

  • এরূপ কত মূৰ্ত্তি আছে, তাহার সংখ্যা নাই। আমরা দৃষ্টান্তগুলে দুই চারিটির উল্লেখ করিতেছি। খুলন। সহরস্থ কালাবাটাতে একট বাসুদেবমূৰ্ত্তি, সেখহাটির ভুবনেশ্বরী মন্দিরে ঐরূপ একটা বিষ্ণুমূৰ্ত্তি, মহেশ্বর পাশায় শ্ৰীগোবিন্দচন্দ্র ভদ্রের মন্দিরে ২টি পাষাণময়ী ও একট পিত্তল নিৰ্ম্মিত বিষ্ণুমুৰ্বি, লাউপালার মন্দির গাত্রে ১ট ও নড়াইল বাবুদিগের প্রাচীরগাত্রে ১টি বিষ্ণুমূৰ্ত্তি আছে। ইহা ব্যতীত গদাধর, জনাৰ্দ্দন প্রভৃতি মূৰ্ত্তি অনেক স্থানেই রক্ষিত আছে।

শ্ৰীবিনোদবিহারি কাব্যতীর্থ বিদ্যাবিনোদ প্রণীত “বিষ্ণুমূৰ্ত্তি পরিচয়” স্রষ্টব্য।