পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দনুজমর্দন দেব। - ২৭৯ বৎসর পরে বাচিয়া থাকিয়া চন্দ্রদ্বীপ হইতে যে মুদ্রা প্রচলন করিতে পারেন না, তাহা আর কাহাকেও বুঝাইয়া দিতে হইবে না। . সুতরাং নিঃসংশয়রূপে সপ্রমাণ হইল যে বিক্রমপুরের দনুজমাধব ও চন্দ্রদ্বীপের দনুজমর্দন এক ব্যক্তি নহেন। সেন-বংশীয়দিগের সহিত চন্দ্রদ্বীপের বঙ্গজ কায়স্থকুলোদ্ভব দেব-বংশীয় দনুজমর্দনের কোন প্রকার সম্বন্ধ আছে বলিয়া বোধ হয় না। “নামের সাদৃপ্ত ব্যতীত দনেজমাধব ও দনুজমর্দনের এক ব্যক্তি হওয়ার কোন বলবৎ প্রমাণ নাই।” * সুতরাং র্যাহারা এই দুই ব্যক্তি অভিন্ন ধরিয়া লইয়া সেনরাজগণকে কায়স্থ প্রতিপন্ন করিয়াছিলেন, তাহাদিগকে প্রমাণাস্তরের আশ্রয় লইতে হইবে। এক্ষণে তাহ হইলে জিজ্ঞাস্ত, এ দনুজমর্দন কে ? সম্প্রতি কায়স্থ দেব-বংশের ইতিবৃত্তসম্বলিত যে একখানি হস্তলিখিত প্রাচীন কুলগ্রন্থ পাওয়া গিয়াছে, তাহাতেই এ প্রশ্নের উত্তর দিতেছে। এই পুথিখানি ১৬২২ শকে বা ১৭০০ খৃষ্টাব্দে অন্ত একখানি পুথি হইতে নকল করা হয়। পুথিখানিকে প্রামাণিক বলিয়া বোধ হয়। । দেব-বংশীয়ের রাজকীয় কার্য্যে

  • গৌড়ের ইতিহাস (স্ত্রীরজনীকান্ত চক্ৰবৰ্ত্তী), ১ম খণ্ড, ১১৮ পূঃ।

ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ সবডিভিসনের পুড়াগ্রামনিবাসী শ্ৰীযুক্ত ক্ষিতীশচন্দ্র দেব রায় মহাশয়ের নিকট এই কুলগ্রন্থখানি পাওয়া গিয়াছে। মহামহোপাধ্যায় শ্ৰীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এম, এ, প্রাচ্যবিদ্যামহার্ণব খ্ৰীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বস্তু এবং প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক খ্ৰীযুক্ত নিখিলনাথ রায় মহাশয়গণ ইহা যে একখানি দুইশত বৎসয়াধিক কালের প্রাচীন পুথি এবং প্রামশিক কুলগ্রন্থ তাহ স্বীকার করিয়াছেন। ঐযুক্ত নিখিল বাবু তাহার “শাশ্বতী" পত্রিকায় টাকা টিপ্পনী সহ এই গ্রন্থ প্রকাশিত করিতেছেন। গ্রন্থখানি বটুভট্ট নামক একজন ঘটক দ্বারা সংস্কৃত ভাষায় লিখিত । পুথির শেষ “শকনরপতেরর্তীতাব্দ ১৬২২ সৌরবৈশাখস্ত পঞ্চম দিবদে” বলিয়া লিখিত আছে। খ্ৰীযুক্ত রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এম, এ মহোদয় এই গ্ৰন্থখানিকে প্রমাণিক বলিয়া স্বীকার করেন নাই। তিনি বলেন “ইহা হয় খৃষ্টীয় দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দীতে লিখিত, নতুবা ইহা কৃত্রিম। বর্তমানযুগের শত শত কুলপঞ্জিকার স্থায় দুই দশ বৎসর পূর্বে লিখিত এবং বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় প্রাচীনীকৃত।” দনুজমর্দনের মুদ্র সম্বন্ধে আমি ও রাখাল বাবু উভয়ে “প্রবাসী" পত্রে যে দুইটি প্রবন্ধ লিখিয়াছিলাম, উহার মধ্যে ইlখাল বাবু যে সকল অনুমান করিয়াছিলেন, কুলগ্রন্থেয় বিবরণীতে অবিকল তাহাই খাটয় যাইতেছে দেখিয়া রাখাল বাবু মনে করেন রাধের্শ বাবু ও আমার মুদ্রার আবিষ্কারের পর এ গ্রন্থ রচিত হইয়াছে। অনুমানের যথার্থ্য বর্ণে বর্ণে মিলিতে দেখিলে সমোহ হয় বটে,কিন্তু তাই বলিয়াই গ্ৰন্থখানিকে অপ্রমাণিক বলা সঙ্গত বোধ হয় না। আমাদের বিশ্বাস রাখাল বাবু এ গ্রন্থখানি বিশেষভাবে পরীক্ষা করিবার অবসর গাইলের্তাহার মত প্রত্যাহার করিতে পারেন। এই বিষয় লইয়া ‘শাখন্তী" পয়ে যথেষ্ট বাদ প্রতিবাদ চলিয়াছে এবং গ্রন্থখানির দুইটি পাতার আলোকচিত্রও প্রকাশিত হইয়াছে (শাশ্বতী, ১৩২•, শ্রাবণ, ২৪০-২৫৬ পৃঃ)