পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাহ্যিক প্রকৃতি ও বিভাগ। XX agদও প্রচুর পরিমাণে জন্মে। দক্ষিণভাগে জমি অত্যন্ত নিম্ন, বৎসরের অধিকাংশ সময় জলমগ্নই থাকে ; লোকসংখ্যা অতি সামান্ত, প্রবল নদীর দুই বুলি বার্তত অন্যত্র প্রায় লোক বাস করিতে পারে না এবং সেরূপ লোকের বসতিও বড় অধিক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয় নাই। এ ভাগের অধিকাংশ ভীষণ জঙ্গলে আবৃত। এই জঙ্গলকে সুন্দরবন বলে। সুন্দর বনের বৃক্ষের প্রকৃতি অন্তস্থান হইতে সম্পূর্ণ পৃথক। এ অঞ্চলে লোকালয়ের পরিচয় দিতে নারিকেল জাতীয় দুই চারিটা বৃক্ষ ব্যতীত অন্ত উদ্যান বৃক্ষ জন্মে না বলিলেও চলে। যাহা আছে, সকলই শক্ত এবং জ্বালানি কাঠের গাছ। তবে যেখানে স্থান একটু পলির বলে উচ্চ হয়, সেখানে মনুষ্যে বল ও কৌশলে শ্বাপদসঙ্কুল স্থানে আত্মরক্ষা করিয়া বাদা’ বা জঙ্গল কাটিয়া ‘আবাদ’ বা শস্তক্ষেত্র প্রস্তুত করিতেছে। এবং সেই বহুযুগের পতিত নবাবিষ্কৃত আকৰ্ষিত ক্ষেত্রে বীজমুষ্টি নিক্ষেপ করিলে, শস্তের স্বর্ণবৃষ্টি হয়। এইরূপে সোণ ফলাইবার লোভে লোকে সেই হিংস্ৰজন্তপূর্ণ অঞ্চলে প্রাণ হাতে করিয়া বাস করে । - উত্তরভাগে নদী মরিতেছে, জমি জলগণ্ড’ বা বন্ধজলে দূষিত এবং দেশ অজন্ম হইতেছে। নানাবিধ রোগে ও মহামারীতে স্থায়িভাবে বসতি করিয়াছে, অধিবাসিগণ প্রাণের ভয়ে দূরে সহরে পলায়ন করিতেছে, ফলে লোক সংখ্যা কমিতেছে। বহুদিন হইতে যশোহর জেলার এই লোকক্ষয় দেখিয়া সকলেই শঙ্কাকুল হইয়াছেন। মধ্যভাগে পূৰ্ব্বাংশের কিছু উন্নতি ও পশ্চিমাংশের কতকটা অধঃপতন অলক্ষিত না থাকিলেও, মোটের উপর বিশেষ কিছু হ্রাসবৃদ্ধি দেখা যায় না। দক্ষিণভাগে জমি উঠিতেছে; শস্তক্ষেত্র বিস্তার লাভ করিতেছে, উত্তর দিক্ হইতে আক্রান্ত হইয়া সুন্দরবন যেন ক্রমশঃ দক্ষিণে সরিয়া যাইতেছে। নূতন রোগপীড়া নাই, হিংস্ত্রের উৎপাত দিন দিন কমিতেছে ; শস্তের লোভে বসতির আয়তন ও লোক সংখ্যা প্রবল বেগে বাড়িয়া চলিতেছে। সকল দেশের একটা প্রকৃতি এই দেখা যায়, যেস্থানে বহুদিন লোকের বাস ছিল, মানবসমৃদ্ধি যেখানে বহুদিন লীলা করিয়াছে, সেস্থান কালে দূষিত হয়, জঙ্গলাকীর্ণ হইয়া বসতির অযোগ্য হয়, মানুষ কতক ধ্বংস প্রাপ্ত হয় এবং অবশিষ্ট চলিয়া যায়। সমৃদ্ধ পল্লী বা সহর শ্বাপদসমুল হইয়া পড়ে। প্রকৃতি মেৰী বড় পরিবর্তনপ্রিয়। আলোচ্য যুক্ত জেলায় ইহা বেশ দেখা যায়। উত্তরভাগে