পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যশোহর-খুলনার ইতিহাস । وار) গ্রন্থঃ স্বশ্নবিচারমন্থমথিতাদ্বিস্তীর্ণবিদ্যার্ণবাৎ, সার প্রতিসমীভাস্বমনসাং তেনয়মভূস্থত। ভূবনানন্দ গোঁড়াধিপতির কবিসভা সম্ভাষণে মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বিদ্যার্ণব মন্থন করিয়া স্বশ্ববিচারসম্পন্ন মহাগ্রন্থ সম্পাদন করেন। বাস্তবিকই ভুবনানন্সের সৰ্ব্বতোমুখী পাণ্ডিত্যে দেশের মুখোজ্জ্বল করিয়াছে। আমরা কিন্তু তরল গল্পে বিশ্বাস করিয়া সে পণ্ডিতপরিবারকে ভূপ্রোথিত করিয়া রাখিয়াছি। দেশে ইতিহাসচর্চার ৰে কত আবশ্বক, তাহা ইহা হইতে বুঝা যায়। ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ-গাজীর আবির্ভাব । শিশুকাল হইতে আমরা গাজীর কথা শুনিয়া আসিতেছি। নিম্নবঙ্গে গাজীর কথা শুনে নাই, এমন লোক পাওয়া যায় না। রামলক্ষ্মণের মত গাঙ্গীকালুর নামও এক সঙ্গে গ্রথিত। যশোহর-খুলনার নিম্নশ্রেণীর মধ্যে “মনসার ভাসান" যেমন প্রচলিত, “গাজীর গীত”ও তেমনি। ইহাতে শুধু গীত নহে, "আলাপচারি”ও আছে অর্থাৎ গানের মাঝে মাঝে পাচলির মত গাজী কালুর জীবনকথা কথিত হয়। এক সময়ে এদেশে গাজীর গীত এত প্রচলিত ছিল; এবং উহার একই কথা লোকে শুনিতে শুনিতে এমন বিরক্ত হইয়া গিয়াছিল, যে “গাজীর গীতের জালাপ” বলিলে, যে কথা লোকে শুনিয়া শুনিয়া আর শুনিতে চাহে না, এমন কথা বুঝায়। গাজীর নামে এই দুই জেলায় কত গ্রামের নাম আছে, গাজীরহাট, গাজীরঘাট, গাজীপুরের অভাব নাই। লোকে কোনও কার্য্যে বলপ্রয়োগ করিবার সময় গাজীর নাম স্মরণ করে। তবে গাজীর নাম সৰ্ব্বাপেক্ষ অধিক স্মরণ করে, নৌকার দাড়িমাঝিরা। এই নদীমাতৃক দেশে গাজীসাহেব নাবিকদিগের আরাধ্য দেবত হইয়া রহিয়াছেন। এ গাজীসাহেব কে? লোকে তাহার কথা যত শুনে, তেমন কি তাহাকে কেহ চিনে ? হস্তর নদীপথে নৌকা ছাড়িবার সময় যখন দাড়িমাঝি যথাস্থানে উপবিষ্ট হইয়া, গঁড়ে ও হাইলে হস্তার্পণ করিয়া ভক্তিবিনত ধীর গম্ভীরভাবে “গাজী বদর বদর” বলিয়া প্রাণ খুলিয়া ডাকে