পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

wobro যশোহর-খুলনার ইতিহাস । নামসংযুক্ত চাম্পাইনগরে নহে। অনেক অনুসন্ধানের ফলে দেখিয়াছি, ইহ বারবাজারেরই একাংশ । বর্তমান বারবাজার রেলওয়ে ষ্টেশনের পূর্বদিকে এক মাইল পথ অগ্রসর হইলে, একটি প্রকাণ্ড দীঘি দেখিতে পাওয়া যায়। উহাকে সাধারণ লোকে শ্রীরাম রাজার দীঘি বলে। ঐ দীঘির দক্ষিণ ও বাদুরগাছার পশ্চিমাংশকে পুৰ্ব্বে ছাপাইনগর বলিত। স্থানীয় বৃদ্ধ মুসলমান অধিবাসীরা এখনও ছাপাই নগর জানে। এখন ছাপাইনগর উক্ত বাদুরগাছা মৌজার অন্তভুক্ত হইয়াছে ; কিন্তু সেখান হইতে শ্রীরাম রাজার গড়বেষ্টিত বাড়ী লুপ্ত হয় নাই। শ্রীরাম রাজার দীঘি অতি সুন্দর জলাশয় ; উছ উত্তর-দক্ষিণে দীর্ঘ ; জলে শৈবালাদি নাই, পাহাড় অতি উচ্চ, জল নিৰ্ম্মল। পূর্ব ও দক্ষিণ তীরে প্রকাগু বাধা ঘাটের ভগ্নাবশেষ আছে। এই দীঘি হইতে একটু পূৰ্ব্বদিকে অগ্রসর হইলেই শ্রীরাম রাজার বাড়ী দেখা যায়। সে বাড়ীর চারি ধার নদীর মত বিস্তৃত গড়ের দ্বারা বেষ্টিত। সে গড়ে এখনও জল আছে, এবং রাশি রাশি প্রস্ফুটিত পদ্মে সমাচ্ছন্ন হইয়া অপূৰ্ব্ব নয়নাভিরাম শোভা বিস্তার করে। এই গড়খাই এত বিস্তৃত, গভীর এবং দুর্গম যে উহ! পার হইয় ভগ্নবাটীতে যাওয়ার উপায় নাই। সে বাট বাঁশের ঝোপ ও বন্ত বৃক্ষে সমাচ্ছন্ন হইয়া শ্বাপদসমূহের আশ্রয়স্থান হইয়াছে। সেখানে বাঘ বোধ হয় সৰ্ব্বদা আছে, এবং স্থানীয় লোকের বিশ্বাস ঐ পরিখাবেষ্টিত বাড়ীর দক্ষিণ তীরে এক বৃহস্পতিবারে গাজী সাহেব প্রথম জাহির বা প্রকাশ হন বলিয়া, প্রতি বৃহস্পতিবারে রাত্রিতে সে স্থানে ব্যাঘ্ৰ নিশ্চয় আসিয়া থাকে, কারণ গাজী ব্যান্ত্রের দেবতা। পথে আসিতে আসিতে গাজীর সহিত অনেক শিষ্য জুটিয়াছিল, তিনি দলবদ্ধ হইয়া স্ত্রীরাম রাজার বাড়ীর দক্ষিণে পরিখাপারে যেখানে প্রথম আস্তান। করিয়াছিলেন, তথায় এক ট অতি প্রকাও বহুবর্ষজীবী বটবৃক্ষ সাক্ষীর মত এখনও দণ্ডায়মান আছে। যাহা হউক গাজী কালু এখানে শ্রীরাম রাজার উপর অমানুষিক অত্যাচার করিয়া এমন কি তাহার স্ত্রী হরণ করিয়া, দেশশুদ্ধ হিন্দু বৌদ্ধকে মুসলমান করিয়া, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করিয়া চলিয়া যান। শ্রীরাম রাজা ইসলাম ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিলে রাণী প্রত্যপিত হইয়াছিলেন। গাজীর এই অত্যাচারকাহিনী মুসলমানদিগের নিজের পুথিতেও প্রকাশিত হইয়া পড়িয়াছে। -