পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাঠান আমলে দেশের অবস্থা। 8لاه থাকিতে হইয়াছিল যে তাহার সে শাসনের অন্তরালে সমগ্র বঙ্গে, এমন কি, মহম্মদাবাদ, খালিফাতাবাদ, ফতেয়াবাদ সরকারে অর্থাৎ যশোহর-খুলনায় যথেষ্ট প্রাদেশিক শাসন বিভ্ৰাট ঘটিয়াছিল। উহারাই ফলে ভূঞা রাজগণের আবির্ভাব হইতেছিল। আমরা দেখিব পরবর্তী ত্রিশ বৎসর কালের মধ্যে যশোহরখুলনার উত্তরাংশে ফতেয়াবাদে মুকুন্দরাম রায় এবং দক্ষিণাংশে যশোর-রাজ্যে বিক্রমাদিত্য ও তৎপুত্র প্রতাপাদিত্য মস্তকোত্তোলন করেন। এই ভুঞা রাজ গণকে পরাভূত করিবার জন্য যথেষ্ট বল ক্ষয় করিয়া মোগল-কুলতিলক আকবরকে বঙ্গদেশে জয়পতাকা উড়ন করিতে হইয়াছিল। বর্তমান পুস্তকের পরবর্তী খণ্ডে সে বিষয়ের অবতারণা করা যাইবে। আমরা এক্ষণে পাঠান আমলের সাধারণ অবস্থার কতক স্থূল মৰ্ম্ম দিয়া এ খণ্ডের উপসংহার করিব। পাঠান ও মোগল—নবাগত পাঠান বঙ্গে প্রবেশ করিবার সময়ে হিন্দুর দেশে পদে পদে বাধা পাইয়া, ধৰ্ম্ম প্রচারে, রণরঙ্গে বা অত্যাচারে আত্মপ্রতিষ্ঠা করিয়াছিল। আবর্তের প্রথম স্তর পার হইলে, তাহারা স্থির হইল ; তখন দেখা গেল, তাহারা ধনলুণ্ঠন বা দূরে বসিয়া রাজ্যশাসন করিবার জন্ত আসে নাই। তাহারা আসিয়াছিল, ধৰ্ম্মপ্রচার করিতে এবং স্থায়িভাবে বঙ্গদেশে বাস করিতে। সুতরাং তাহার ক্রমে ক্রমে পরকে আপন করিয়া, হিন্দুকে মুসলমান করিয়া, হিন্দুমুসলমান উভয়ের হিতকর কার্যাদির প্রতিষ্ঠান করিয়া, মিলিয়৷ মিশিয়া বসতি স্থাপন করিল। কিন্তু মোগল তাহ করে নাই ; মোগল আসি স্থাছে, গিয়াছে, রাজ্য শাসন করিয়াছে, কিন্তু বঙ্গদেশে বিশেষ কিছু চিহ্ন রাখিয়া যায় নাই। অথচ প্রাচীন যুগের পাঠান কীৰ্ত্তিসমূহ এখনও বর্তমান। এই কীক্তি-মন্দিরগুলির স্থাপত্যেরও একটা বিশেষত্ব আছে। স্থাপত্য-কুটারই ভারতবর্ষের আদর্শ আবাসস্থলী—বিশেষতঃ গাঙ্গেয় উপদ্বীপে এবং তদন্তৰ্গত যশোহর-খুলনায়। এ দেশে পাহাড় পৰ্ব্বত নাই ;. লোমাটাতে ইষ্ট ভাল হয় না; বাহ হয়, তাহ বহুকালুটিকে না। অথচ এই গরিব দেশে কাঠ, খড়, বাশ, নল, গোলপাত প্রচুর জন্মে ; সুতরাং কাঠ বা বঁাশের সাহায্যে পর্শশালা নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করাই এ দেশের চিরস্তুন প্রথা । এই পর্ণশালাগুলি চোঁচালী বা দোচালা হইয়া থাকে ; চৌচালা ঘরের জাদশ রাঢ় হইতে আসিয়াছিল, উহাকে সাধারণত চেরি বর বলে গোচাল বরের পদ্ধতি