পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৫০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 eV, যশোহর-খুলনার ইতিহাস। বৈদ্য কায়স্থ ছাড়া এত অধিক সংস্কুতানুরাগী জাতি নাই। যোগীদিগের সাধারণতঃ গায়ের রঙ, বেশ ফরসা ; ইহাতে তাহাদিগকে যেন এদেশের লোক বলিয়া বোধ হয় না। যোগীরা কিছু নিরীহ, ধৰ্ম্ম প্রাণ, তাহারা মোকদ্দমামামলার বিশেষ পক্ষপাতী নহে। যোগীরা অনেকে নিরামিষ আহার ভালবাসে, পূজাদিতে পশুবলি দেয় না। তাঁহাদের মৃতদেহ পূৰ্ব্বে অগ্নিদগ্ধ করিত না ; যোগাসনে উপবিষ্ট অবস্থায় পুতিয়া রাথিত । * এই সকল দেখিলে বোধ হয়, ইহারা যেন এ দেশের জাতি নহে, ইহারা যেন কোন উচ্চ সম্প্রদায়ভুক্ত এবং পৃথক্ ধৰ্ম্মাবলম্বী। ঐতিহাসিক অনুসন্ধান দ্বারাও তাছাই স্থিরীকৃত হইয়াছে । বৌদ্ধযুগের শেষাবস্থায় একদল যোগাচারী বৌদ্ধ এক নূতন সম্প্রদায় গঠন করেন। তাহারা নাথ” উপাধিধারী বলিয়া ঐ সম্প্রদায়কে নাথসম্প্রদায় বল৷ হয় । ইহাদের মধ্যে আদিনাথ, মীননাথ, গোরক্ষনাথ মৎস্তেন্দ্রনাথ, মীননাথ, চৌরঙ্গীনাথ প্রভৃতি প্রধান । এক সময়ে ইহারা ভারতবর্ষের নানাস্থানে ভারতীয় রাজন্তবর্গের গুরুপদে বরিত হইয়াছিলেন । নেপালে ৭ তিব্বতে এখনও ইহাদের অনেকের পূজা হয়। নেপালে পশুপতিনাথদেবের মন্দিরের সম্মুথে গোরক্ষনাথের মন্দির বর্তমান আছে। হঁহাদের ধৰ্ম্মমত ক্রমে পরিবর্তিত হইলেও হিন্দু অপেক্ষা তাহার বৌদ্ধমতেরই অধিকতর পক্ষপাতী ছিলেন। নাথ-যোগিগণ সেনরাজত্বে বঙ্গের অনেকস্থানে প্রতিপত্তিশালী ছিলেন। “দেশাবলীবিবৃতি” নামক পুস্তকে কথিত হইয়াছে, জনৈক বৌদ্ধ নরপতি বঙ্গদেশীর যোগিপণ্ডিতের রাজধানী ধৰ্ম্মপুর অধিকার করিয়া লইয়াছিলেন। নাথগণ বঙ্গদেশে নানাজাতি হইতে

  • আমাদের দেশে এখনও কাহারও গায়ের রঙ অতিরিক্স ফরসা দেখিলে, তাহাকে “যুগেন সুন্দর” বলা হয় ; অর্থাৎ যেন তেমন শ্বেতবর্ণ এদেশীয় লোকের প্রকৃত রঙ নহে। যোগীরা এখন হিন্দুর মত শবদেহ পুড়াইয়। থাকে ; পূৰ্ব্বে শুহি পুতিয়া রঃখিত। উপবিষ্ট অবস্থায় পুতিয়া রাখা হিন্দু চক্ষে বিসদৃশ লাগিত, তাহারা মনে করিত উহাতে যেন শবদেহ কষ্ট পায়। এখনও লোকে “যুগেন পোতা পুতিবার” ভয় দিয়া থাকে।

+ Modern Budhism by N. N. Bosu P. 16, J. A. S. B. (1895) "Budhism in Bengal”

A. S. B. Ms no. 3582. Discovery of Living Buddhism in Bengal by M. M., Haraprasad Sastri Ai. A. p. 5.