পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२९ যশোহর-খুলনার ইতিহাস । ভদ্র সুন্দরবনের নদী—এখনও পূৰ্ব্ববং অভদ্র । নানা শাখা বিস্তার করিয়া অবশেষে ভদ্র শিবসা ও পশরে মিশিয়া গিয়াছে । শিবসাও একটি রীতিমত সুন্দর বনের বড় নদী। ইহাও পশরের মত সমুদ্র পর্যন্ত গিয়াছে। সমুদ্রে পড়িবার পূৰ্ব্বে ইহার নাম হইয়াছে মজ্জাল। উপর হইতে ঢাকি, ভদ্র, মেনস ও কয়রা প্রভৃতি অনেকগুলি ছোট বড় নদী শিবসার পুষ্টিসাধন করিয়াছে। ঢাকি ইহাকে পশরের সহিত মিশাইয়াছে, এবং মেনস ও কয়রা ইহাকে কপোতাক্ষের সহিত সংযুক্ত করিয়া দিয়াছে। এতক্ষণ আমরা ভৈরব কপোতাক্ষ ছাড়িয়া পশ্চিম দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হইতে পারি। ভৈরব কপোতাক্ষ যেমন দেশ জুড়িয়া বহুনদীর সহিত সম্বন্ধ পাতাইয়াছে, এ দিকে ইচ্ছামতী-যমুনাও তেমনি বহু বিস্তৃত প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত করিয়াছে। মাথাভাঙ্গ ভৈরব ছাড়িয়া দক্ষিণ দিকে আসিয়া কৃষ্ণগঞ্জের কাছে চূর্ণনাম ধারণ করিয়াছিল । সেইস্থান হইতে উহার একটা শাখা বাহির হইয় পুৰ্ব্বমুখে আসিয়াছে, তাহার নাম ইচ্ছামতী । ইচ্ছামতী এখনও মরে নাই, সে এখনও পদ্মার জল লইয়া স্বচ্ছ-সলিলে গভীরখাতে প্রবাহিত হইতেছে। ইচ্ছামতী বর্তমান বনগ্রাম রেলষ্টেশনের পূর্বদিক্ দিয়া আসিয়া, গোবরডাঙ্গার দক্ষিণে টিপি নামক স্থানে যমুনার সহিত মিশিয়াছে। এ যমুনা সেই যমুনা। যে যমুনার তটে ইন্দ্রপুরাতুলা রাজপাট বসাইয় কুরু-পাণ্ডবে ইন্দ্রপ্রস্থ হস্তিনাপুরে রাজস্বয় যজ্ঞ সুসম্পন্ন করিয়াছিল, যে কালিনীতটে বংশীবটে শ্রীকৃষ্ণের প্রেমধৰ্ম্মের অপূৰ্ব্ব লীলাভিনয় হইয়াছিল, যে যমুনার তীরে দিল্লী-আগ্ৰায়, মথুরা-প্রয়াগে, হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ ধৃষ্টান, মোগল-ইংরাজ, শত শত রাজরাজেশ্বর সমগ্র ভারতের রাজদণ্ড পরিচালনা করিতেন, এবং এখনও করিতেছেন, এ সেই একই যমুনা। সেই তমালকদম্বপরিশোভিত, কোকিল-কুজন-মুখরিত, নিৰ্ম্মল সলিলে প্রবাহিত “তটশালিনী সুন্দর যমুনা।” সকলেই জানেন যমুনা ও সরস্বতী বিভিন্ন পথে আসিয়া প্রয়াগ বা এলাহাবাদের নিয়ে গঙ্গার সহিত মিশিয়া গিয়া বিলুপ্ত হইয়াছে। এইজন্য প্রয়াগের নাম যুক্তত্রিবেণী স্বরতরঙ্গিণী গঙ্গা সেই যুক্তপ্রবাহে বলদৃপ্ত হইয়া বঙ্গভূমিতে ভাগীরথী নামে সপ্তগ্রাম পর্যন্ত আসিয়াছে। সেখানে আসিয়া সরস্বতী দক্ষিণে ও যমুনা বামে বিমুক্ত হইয়