পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ—অন্যান্য প্রাকৃতিক বিশেষত্ব। মৃত্তিকা - যশোর-খুলনায় কোন পৰ্ব্বত বা পাহাড় নাই। রাঢ় বা পশ্চিমাঞ্চলের মত এখানকার মাট রক্তাভ বা কঙ্করময় নহে। গঙ্গার গৈরিকবর্ণ পলিমাটা অল্পাধিক বালুকামিশ্রিত হইলে যে ঈষৎ পাটলবর্ণ হয়, এ অঞ্চলের মাটীর তাহাই সাধারণ রঙ । যতদূর পর্য্যন্ত মিষ্টজল যায়, বা পূৰ্ব্বে যাইত, ততদুর এই মাটর রঙ আছে এবং ততদূর পর্য্যন্ত পরিমাণে বালুক দেখা যায়, নদীর তলে, কুলে বা চরে শ্বেতবর্ণ বালুকী—উহার জন্ত জল পরিষ্কৃত এবং নদীতীরে কর্দম থাকে না। কিন্তু দক্ষিণে লবণাক্ত নদীর কূলে ভীষণ কর্দম, তাহাতে পা দিলে কদমে মানুষ ডুবিয়া যায় এবং সে গাত্রলিপ্ত কর্দম সহজে ধৌত হইতে চাহে না । মুন্দরবনে বৃক্ষাদি পচিয়া অনেক স্থানে ঘোর কৃষ্ণবর্ণ মটি হয়, তাহাই জোয়ারে বাহিত হইয়া উত্তরদিকে পাৰ্ব্বত্য পলিকে কৃষ্ণাভ করিয়া দেয়। এ দেশের মাটী উদ্যান বা শস্তের পক্ষে ভাল, কিন্তু উহা প্রাচীরাদি নিৰ্ম্মাণে ভাল নহে। এজন্য মৃত্তিকার প্রাচীরবেষ্টিত গৃহের সংখ্যা খুব কম। পশ্চিমাঞ্চলে ইষ্টক গৃহ ব্যতীত সব গৃহই যেমন মৃত্তিকার প্রাচীরবিশিষ্ট, এদেশে তাহী নহে। যাহা অল্পসংখ্যক আছে, তাহা উত্তমভাবে লেপিয়া জলবৃষ্টি হইতে রক্ষা করিতে হয়। দক্ষিণভাগে মাৰ্টী অত্যন্ত লবণাক্ত, তদ্বারা প্রাচীর গাঁথিলে অচিরে খসিয়া পড়ে। ইষ্টক প্রভৃতিরও ভাল রঙ, খুলে না এবং তেমন শক্ত হয় না। পূৰ্ব্বে বখন ভৈরব প্রভৃতি নদ নদী দিয়া পাৰ্ব্বত্য মিষ্টজল নামিত, তখন মাটা এত লোণ ছিল না ; ইট, প্রাচীরও ভাল হইত। পাঠান আমলের বা পঞ্চদশ শতাদের যে ইট দেখা যায়, তাহা মোগল আমলের বা ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাদের ইট অপেক্ষ অনেক ভাল। - গৃহ-দেশিক অবস্থান অনুসারে মানুষের গৃহনিৰ্ম্মাণের উপাদানও পৃথক হইয়া থাকে। মাটীর প্রকৃতির সহিত ইহার ঘনিষ্ট সম্বন্ধ। ইষ্টক ৰী মৃন্ময় প্রাচীরের গৃহ বোধ হয় এ দেশের লোকের অবস্থার অনুরূপ নহে। যশোহর-খুলনায় বিশেষতঃ খুলনার দক্ষিণাংশে যেমন স্বল্পব্যয়ে, গৃহনিৰ্ম্মাণ করা বায়, এমন বোধ হয় কুত্রাপি, হয় না। যশোহরে ও খুলনার উত্তর ভাগে