পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪ -- - যশোহর-খুলনার ইতিহাস । লবণাক্ত এবং জলীয় বাষ্পপূর্ণ। তজ্জষ্ঠ দেশের সমস্ত জিনিষই যেন বারমাসকেমন সিক্ত থাকে, শুষ্ক বা খট্রখটে ভাবের একপ্রকার অভাব বলিলেই হয়। এখানে রৌদ্রে কাপড় শুকাইতে বিলম্ব হয়, গ্রীষ্মকালে মানুষের গায়ে অত্যন্ত ঘৰ্ম্ম হয়, এবং ঘামাচি, খোস পাচড়া ও দাদ প্রভৃতি চৰ্ম্মরোগ কিছু বেশী। লোণ হাওয়ায় মানুষের শরীর শ্লেষ্মপ্রধান হয়, তজ্জন্ত মানুষকে অলস করিয়া ফেলে। এ দেশে শীতকালে লোকে বেশী খায়, বেশী হজম করে এবং অধিক কাজ করে, কারণ তখন লোণ হাওয়া থাকে না। গ্রীষ্মকালে তেমন খাইতে পারে না, কাজ করিতে পারে না, শুধু দিবানিদ্রাই সার হয়। লোণ হাওয়ার ক্রিয়া কমাইবার জন্য লোকে স্নানের পূৰ্ব্বে গায়ে প্রচুর পরিমাণে তৈল মৰ্দ্দন করে। * জল—লোণ হাওয়া যেমন খারাপ, লোণ জলও তেমনি। ইহা পানীয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় না বটে, কিন্তু স্নানে দোষ নাই ; বরং লোণা জলে স্নান করিলে শরীর ভাল থাকে। এই জন্তই স্বাস্থ্যের জন্ত সমুদ্রমানের ব্যবস্থা হইয়া থাকে। লোণাজলে চৰ্ম্মরোগ একটু বাড়ে বটে, কিন্তু অন্ত রোগ খুব কম হয়। যশোহরে বদ্ধজলে ম্যালেরিয়া বাসা করিয়াছে বটে, কিন্তু এখনও সে দক্ষিণাঞ্চলে যাইতে অনেকটা ভয় পায়। লোণ জল হাওয়ায় মানুষের শরীরের রঙ তাম্রবর্ণ করিয়া দেয়, গঙ্গার তটবৰ্ত্তা সে কমকান্তি এই সুন্দরবনের রাজ্যে নাই। লোণ হাওয়ার মত লোণ জল সৰ্ব্বত্র যায় নাই ; উত্তরে ভৈরব পৰ্য্যন্ত লোণ জল গিয়াছে, তাহার উত্তরে নদীর জল মিষ্ট। চিত্র, নবগঙ্গা, কুমার বা গোরাই নদীর জল অতীব উপাদেয়। ভৈরবের দক্ষিণে নদীপথে যাইতে হইলে যেমন পানীয় জল সঙ্গে লইতে হয়, উত্তরদিকে তেমনি শুধু জলেই মানুষকে তৃপ্তি দেয়। নবগঙ্গা প্রভৃতি নদীর তলে ও চড়ায় বালুক অধিক, এজন্ত জল স্ফটিকবৎ দেখায়। কপোতাক্ষের জল এখনও উত্তরাংশে কপোত-চক্ষুর মত নিৰ্ম্মল। একপ্রকার রুদ্ধগতি হইলেও যমুনা এখনও উত্তরাংশে নিৰ্ম্মলসলিলা। দক্ষিণদেশীয় নদীমাত্রে শুধু কৰ্দ্দম, জল ঘোল, নদীর কুলে কোথায়ও বালুকা নাই, এজন্ত সে অঞ্চলে স্নান করিয়াও তৃপ্তি নাই। এ তৈলমর্দনের বিশেষত্ব বিষয়ে Elphinstone বলেন :– “They (the Bengalese) have the practice, unknown in Hindusthan, of rubbing their limb with oil after bathing, which gives their skin a sleek and glossy appearance-and protects them from the effect of their damp climate.” History of India, p 187 籃