পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অষ্টম পত্র

আমি বিলিতি মেয়েদের একটু নিন্দে করে লিখেছিলুম বলে বুঝি সেটা ভালো লেগেছে! কিন্তু আমি সেটা কেবল এক শ্রেণীর মেয়েদের একটা ভাগ দেখিয়েছিলুম মাত্র, তাঁরা হচ্ছেন fashionable মেয়ে, তাঁদের দোরস্ত করতে হলে দিন দুই আমাদের দিশি শ্বাশুড়ির ও ঘরের বিধবা ননদের হাতে তাঁদের রাখতে হয়। তাঁরা হচ্ছেন বড়োমানুষের মেয়ে কিম্বা বড়োমানুষের স্ত্রী— তাঁদের চাকর আছে, কাজ কর্ম করতে হয় না— একজন house-keeper আছে, সে বাড়ির সমস্ত ঘরকন্না তদারক করে একজন nurse আছে, সে ছেলেদের মানুষ করে— একজন governess আছেন (governess ভদ্রলোকের মেয়েদের থেকে নেওয়া হয়) তিনি ছেলেপিলেদের পড়াশুনো দেখেন ও অন্যান্য নানাবিধ তদারক করেন। তবে আর তাঁর পরিশ্রম করার কী রইল বলো! কেবল একটা ঘোরতর পরিশ্রম বাকি আছে— সেইটে তাঁর দিনের মধ্যে সকলের চেয়ে প্রধান পরিশ্রম, অর্থাৎ সাজসজ্জা করা। কিন্তু তার জন্য তাঁর lady's maid আছে, সুতরাং এমন সাধের পরিশ্রমটাও সমস্তটা তাঁকে নিজের হাতে করতে হয় না। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত দিনটা তাঁর হাতে আস্ত পড়ে রয়েছে। সকাল বেলায় বিছানায় প’ড়ে, দরজা জানালা বন্ধ ক’রে সূর্যের আলোক আসতে না দিয়ে, দিনটাকে কতকটা সংক্ষেপ করেন। বিছানায় শুয়ে শুয়ে break-fast খান ও এগারোটার আগে শয়নগৃহ থেকে বেরোলে যথেষ্ট ভোরে উঠেছেন মনে করেন। তার পরে সাজসজ্জা— সে বিষয়ে তোমাকে কোনো প্রকার খবর দিতে পারছি নে। শোনা যায় খুব সম্প্রতি বিলেতে স্নানটা fashion হয়েছে, কিন্তু

১২৯