পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পত্র

পাহারাওয়ালা পাকা-চুলের-পরচুলা-পরা। গাউন-ঝোলানো পার্লামেণ্টের কর্মচারীরা হাতে দুই-একটা খাতাপত্র নিয়ে আনাগোনা করছিলেন। তাঁদের মনে কী ছিল আমি অবিশ্যি ঠিক করে বলতে পারি নে, কিন্তু তাঁদের সেই ভ্রূক্ষেপশূন্য মুখের ভাব দেখে আমার কল্পনা হচ্ছিল যেন তাঁরা মনে মনে দর্শনার্থীদের বলছিলেন, ‘আমাদের দিকে একবার চেয়ে দেখো, আজকের কী হবে না হবে তাই দেখবার জন্যে তোমরা তো দুয়ারের কাছে হাঁ করে দাড়িয়ে আছ, কিন্তু আমরা তা সমস্ত জানি— এখন কিছু ভাঙছি নে— ক্রমে ক্রমে সব টের পাবে।’ তাঁদের দেখে আমার কী মনে পড়ল জানো? আমাদের দেশের গ্রেট ন্যাশানেল থিয়েটরে যখন এখনও যবনিকা ওঠে নি, দর্শকেরা সব বসে আছে, তখন স্টেজের সেই পাশের দরজা দিয়ে দুই-একজন স্টেজ-সংক্রান্ত লোক একবার স্টেজ থেকে বেরোচ্ছেন একবার স্টেজের মধ্যে ঢুকছেন, যেন তাঁরা দর্শকদের জানাতে চান— ‘তোমরা তো এ স্টেজের মধ্যে ঢুকতে পারো না, এর ভিতরে কী হচ্ছে কিছুই জান না, ঐ বেঞ্চিগুলো পর্যন্তই তোমাদের অধিকারের সীমা।’ এই রকম তাঁদেরও সেই মহারহস্যময় মুখের ভাব। এই উইগ-গাউন-পরা ব্যক্তিগণ পার্লামেণ্টের ক্লার্ক্। এঁদের হাতের কাগজপত্রগুলো দেখলে গা’টা কেঁপে ওঠে। চারটের সময় হৌস খুলল। আমাদের কাছে Speaker’s Galleryর টিকিট ছিল। House of Commonsএ ৫ শ্রেণীর গ্যালারি আছে Strangers’ Gallery, Speaker’s Gallery, Diplomatic Gallery, Reporters’ Gallery, Ladies’ Gallery। হৌসের যে-কোনো মেম্বরের কাছ থেকে বৈদেশিক গ্যালারির টিকিট পাওয়া যায়, আর বক্তার অনুগ্রহ হলে তবে বক্তার গ্যালারির টিকিট পাওয়া যেতে পারে। Diplomatic Galleryটা কী

৪৩