পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

পত্রোত্তরে সম্মতি দিয়ে ভাগনার সাহেবকে আমি লিখলুম, ‘গল্পগুলি আমার কাঁচা বয়সের রচনা।’ উত্তরে তিনি লিখলেন, ‘Now I am glad to send you a copy of my work. You will find in it 5 of your stories, among them the two master-pieces “Siuli” and “Kusum.” Blessed be the “callow days” which produce works of such a high standard! “Kusum” is scarcely to be surpassed in its psychological development and the art of unuttered feelings, employed in this story, must be highly admired.’

 আত্মপ্রচারের জন্যে এ উদ্ধৃতি নয়। কারণ তেইশ বৎসর আগে আমি এই চিঠি পেয়েছি, কিন্তু দুই-একজন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছাড়া বাইরের আর কারুকেই তা দেখাই নি। আমি এখানে দেখাতে চাই, বিপিনচন্দ্র ও অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণ যে গল্প প্রকাশযোগ্য বিবেচনা করেন নি, নিশ্চয়ই তা প্রকাশের অযোগ্য ছিল না। বিশেষতঃ বিপিনচন্দ্রের ছিল প্রখর বিচারশক্তি। তবু তিনি গল্পটি গ্রহণ করেননি কেন? এর উত্তর দেওয়া খুবই সহজ।

 “কুসুম” গল্পের বস্তুটুকু মোটামুটি এই: গণিকা কুসুম বারান্দার উপর থেকে দেখতে পেলে, রাজপথে গাড়ী চাপা প’ড়ে এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক অজ্ঞান হয়ে গেলেন। আহত লোকটিকে নিজের ঘরে আনিয়ে, ডাক্তার দেখিয়ে, ঔষধ দিয়ে, কয়েকদিন ধ’রে কন্যার মত সেবা ক’রে কুসুম তাঁকে সুস্থ ও সবল ক’রে তুল্‌লে। জ্ঞান লাভ ক’রে কুসুমের পরিচয় জেনেই ভদ্রলোক তেলে-বেগুনে জ্ব’লে উঠে বললেন, ‘কী, তুই গণিকা! আর আমি ব্রাহ্মণ হয়ে তোর হাতে জল খেয়েছি! পাপিষ্ঠা, দূর হ, দূর হ আমার সামনে থেকে!’ কুসুম কাঁদতে লাগল।

১০১