পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

ঘরের জানলা থেকে। নমস্কারের আদান-প্রদান ও একটি কি দুটি বাক্য বিনিময় হ’ল এবং সেইখানেই সাক্ষাৎকারের পালা শেষ। আমার কাঁচা বয়স দেখে এবং নিজের প্রৌঢ়ত্ব স্মরণ ক’রেই বোধ হয় তিনি আর নীচে নেমে এলেন না। বলা উচিত, আমার বয়স তখন সতেরো-আঠারোর বেশী নয়।

 কিন্তু প্রকৃতির পরিহাস! তেরো-চৌদ্দ বৎসর আগে এই নগেন্দ্রনাথই আমার বাড়ীতে অনাহূত অতিথির মত এসে আমাকে করেছিলেন বিস্মিত ও পুলকিত। তাঁর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎকারের কথা সেদিন তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলুম। শুনে তিনি হাসতে লাগলেন।

 সে যুগের সাহিত্য ও চারুকলা এমন একটি সাত্ত্বিক আবেষ্টনের মধ্যে বৃদ্ধি লাভ করত, আজকাল যার বিশেষ অভাব অনুভব করি। এখন লেখকদের শক্তি যত ক’মে আসছে, বেড়ে উঠছে তত টাকার দিকে লোভ ও Pose বা ভঙ্গী ধারণের দিকে দৃষ্টি। তখন মাসিক সাহিত্যের প্রথমশ্রেণীর লেখকরাও রচনার জন্যে পারিশ্রমিক গ্রহণ করতেন না, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁদের সাধনা ছিল না অর্থকরী এবং তখন এক একটি সাহিত্য বৈঠকে গিয়ে বিবিধ বিষয় সম্বন্ধে যেমন উচ্চ শ্রেণীর সংলাপ শুনে ও পরস্পরের সঙ্গে ভাবের আদানপ্রদান করে ফিরে আসতুম, আজকাল তেমন সুযোগ আর পাওয়া যায় না বললেও অত্যুক্তি হয় না। বাংলাদেশে সাহিত্য ও চারু-কলায় যাঁরা ধুরন্ধর ব’লে শ্রদ্ধাভাজন হয়ে আছেন, অতঃপর আমরা একে একে তাঁদের সঙ্গে পাঠকদের পরিচয়সাধন ক’রে দেব।

১৩