পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

 —‘কেন, আপনি কি তা জানতেন না?’

 —‘না। আমি জানতুম ওরা মোজা প’রে খেলে।’

 তাঁর বইগুলির ছাপাই ও বাঁধাই প্রভৃতি যাতে দৃষ্টি-আকর্ষক হয়, সে সম্বন্ধে তিনি থাকতেন অত্যন্ত সচেতন। নিজে বিশেষ সতর্ক হয়ে বার বার প্রুফ দেখতেন। তবু পাছে ভুল থেকে যায় সেই ভয়ে শ্রীব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (ঐতিহাসিক) প্রভৃতিকে আহ্বান ক’রে বলতেন, যে ছাপার ভুল আবিষ্কার করতে পারবে তাকেই পুরস্কার দেওয়া হবে— প্রত্যেকটি ভুলের জন্যে এক টাকা। কিন্তু এমনি ছাপাখানার ভুতের মহিমা যে, এতখানি সাবধানতার পরেও পুস্তক প্রকাশিত হ’লে দেখা যেত তার মধ্যে মুদ্রাকর-প্রমাদ আছে একাধিক!

 স্বর্ণকুমারী দেবীর প্রসঙ্গে একপদ সুধাকৃষ্ণ বাগচীর গল্প বলেছি। একদিন পণ্ডিত অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের বাড়ীতে গিয়ে দেখি এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। ঘরের মেঝেয় পাতা কাঠের পাটাতনের উপরে খঞ্জ সুধাকৃষ্ণের সঙ্গে সুধীন্দ্রনাথ মল্লযুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়েছেন— রাগ করে নয়, সখ ক’রে। তারপর দু’জনেই জড়াজড়ি ক’রে পাটাতনের উপর থেকে দুম ক’রে পপাতধরণীতলে।

 সুধাকৃষ্ণ তখন প্রায় বালক আর সুধীন্দ্রনাথ প্রায় বৃদ্ধ। প্রাচীন বয়সেও দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিশুশুলভ মন নিয়ে অনেক মজার গল্প প্রচলিত আছে। বোধ করি পুত্র সুধীন্দ্রনাথও লাভ করেছিলেন সেই মনের খানিকটা।

১৩৫