পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

মনে আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও “রাখীবন্ধন” দীর্ঘজীবী হয় নি। বাঙালী দর্শক সহজে কাঁচ-কাঞ্চনের পার্থক্য বোঝে না।

 বন্ধুবর অপরেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সাদর আমন্ত্রণে প্রায়ই যখন ষ্টার থিয়েটারের মহলায় হাজিরা দিতুম, সেই সময়েই তারাসুন্দরীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তখন তিনি প্রৌঢ়া। তারপর সুদীর্ঘকাল ধ’রে নানা স্থানে তাঁর সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা ক’রে বুঝেছি, তিনি ছিলেন অতিশয়, ধীমতী। লেখাপড়া যে করতেন, সে পরিচয়ও পাওয়া যেত তাঁর কথাবার্তায়। আর্ট ও সাহিত্য নিয়ে যুক্তিযুক্ত মতামতও প্রকাশ করতে পারতেন— নবযুগের অনেক নাম-করা অভিনেতাও যা পারেন না।

 তারাসুন্দরীর অভিনয় দেখে এবং তাঁর সঙ্গে পরিচিত হয়ে আমি বাংলাদেশের অভিনেত্রীদের সম্বন্ধে মতপরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছি।

 তারাসুন্দরী সুরূপা ছিলেন না। কিন্তু সুন্দরী নারীর ভূমিকায় যখন তিনি প্রৌঢ় বয়সেও নাট্যমঞ্চের উপরে পদার্পণ করতেন, তখন অপূর্ব ভাবাভিব্যক্তির দ্বারা নিজের মুখে-চোখে-দেহে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন বিচিত্র সৌন্দর্যের প্রপঞ্চ। য়ুরোপেরও অনেক বিখ্যাত অভিনেত্রী এই ভাবে দর্শকদের চোখ ভুলিয়েছেন। সারা বার্নার্ড ও আনা পাবলোভা সুন্দরী ছিলেন না।

১৪২