পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠার আগে “বহুবাজার বঙ্গ-রঙ্গালয়ে”র অবৈতনিক সম্প্রদায় সহরে অত্যন্ত খ্যাতি অর্জন করেছিল। মনোমোহন বসু ছিলেন ঐ সম্প্রদায়ের নাট্যকার ওখানে তাঁর “রামাভিষেক,” “সতী” ও “হরিশ্চন্দ্র” নামে তিনখানি নাটক অভিনীত হয়। “বহুবাজার বঙ্গ-রঙ্গালয়” সম্বন্ধে একটি বিস্তৃত বিবরণ মৎসম্পাদিত “নাচঘর” (প্রথম বর্ষ) পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। মনোমোহনের “রামাভিষেক” নাটকের প্রথম অভিনয়ের তারিখ হচ্ছে ১৮৬৮ খৃষ্টাব্দ। তিনি মোট আটখানি নাটকের নাট্যকার। সাধারণ রঙ্গালয়েও (গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটারে) তাঁর “প্রণয় পরীক্ষা” নামে একখানি নাটক অভিনীত হয় (১৮৭৪ খৃঃ)। তিনি নারী নিয়ে অভিনয়ের বিরোধী ছিলেন। তাই পরে আর সাধারণ রঙ্গালয়ের সম্পর্কে আসেন নি।

 কিন্তু মনোমোহন কেবল নাট্যকারই ছিলেন না, আমাদের বাল্যকালে তাঁর “দুলীন” নামে একখানি প্রকাণ্ড ঐতিহাসিক আখ্যায়িকার গ্রন্থ অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। সাময়িক সাহিত্যেও তাঁর দানের অভাব নেই। প্রথমে তিনি “বিভাকর” নামে এক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তারপর তিনি “মধ্যস্থ” নামে এক সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন, পরে তা পাক্ষিক ও সর্বশেষে মাসিক হয়ে দাঁড়ায়। “মধ্যস্থ” পাঠ করলে প্রথম যুগের বাংলা রঙ্গালয় সম্বন্ধে অনেক দামী দামী তথ্য জানতে পারা যায়। মনোমোহনের স্কুলপাঠ্য পুস্তকও ছিল। তা ছাড়া তিনি বাউল, কীর্তন ও যাত্রার গান বেঁধেও যথেষ্ট প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। এই হ’ল তাঁর সংক্ষিপ্ত পরিচয়।

 গিরিশচন্দ্রের মত মনোমোহনও সর্বপ্রথমে নাট্যকার রূপে আত্মপ্রকাশ করেন নি, নাটক রচনার জন্যে তিনিও লেখনী ধারণ

১৫