পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

গাছে চ’ড়ে খেলা দেখুন।’ অন্য কোন উপায় না দেখে তাই করতে হ’ল।

 প্রায় আড়াই তলা উঁচু একটা ডালের উপরে বাস সানন্দে দেখলুম, জনতার ফ্রেমে বাঁধানো গোটা খেলার মাঠটি চোখের সামনে প’ড়ে রয়েছে। বাইরের মাঠও মানুষের মাথায় মাথায় কালো হয়ে উঠেছে, কিন্তু তখনও আসছে জনতার পর জনতার স্রোত। দেখতে দেখতে দুই পক্ষের খেলোয়াড়দের আবির্ভাব, রেফারির বংশীধ্বনি এবং খেলা হ’ল শুরু।

 মোহনবাগানের প্রতিযোগী ইষ্ট ইয়র্কের দল ঠিক বিজেতার মতই প্রবল বিক্রমে খেলতে লাগল, বাঙালীরাও বাধা দিতে লাগল প্রাণপণে। বল একবার ছুটে যায় ওদিকে, আবার ছুটে আসে এদিকে। অবশেষে মোহনবাগানের গোল থেকে বেশ খানিকটা দূরে ইষ্ট ইয়র্ক পেলে একটি “ফ্রি কিক্”। কিন্তু কি দুর্বিপাক! গোলকিপার হীরালালকে এড়িয়ে বল সাঁৎ ক’রে ঢুকে গেল মোহনবাগানের “গোলপোষ্টে”র ভিতরে। বাঙালী দর্শকরা বজ্রাহত। ইংরেজরা প্রচণ্ড আনন্দে উন্মত্ত—চীৎকার করতে করতে কেউ লাফায়, কেউ শূন্যে টুপী ছোঁড়ে, কেউ পায়রা উড়িয়ে দেয়! কালা আদমীর কাছে পরাজয়? কবি হেমচন্দ্রের ভাষায়—“নেভার, নেভার!”

 কিন্তু তার পরেই পাওয়া গেল শিবদাসের অপূর্ব প্রতিভার আশ্চর্য পরিচয়! তিনি যেন মরিয়া, তিনি যেন একাই একশো! তাঁর স্থান যে “লেফ্‌ট লাইনে” এ কথা আর তাঁর মনে রইল না— কখনো তিনি মাঠের ডানদিকে, কখনো মাঝখানে সকলের পুরোভাগে, কখনো এদিকে, কখনো ওদিকে, কখনো সেদিকে এবং বলও ছুটছে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে। সর্বত্রই শিবদাস! সে যেন ইষ্ট ইয়র্ক

১৫৪