পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

করেছিলেন নাট্যপ্রিয়দের তাগিদেই। “বহুবাজার বঙ্গ-নাট্যালয়” প্রতিষ্ঠিত হবার পর সম্প্রদায়ের পরিচালকরা দেখলেন, অভিনয়ের উপযোগী নাটকের একান্ত অভাব। মনোমোহন বসু তখন ‘কবি’ ও ‘হাফ-আখড়াই’ প্রভৃতি সঙ্গীত-যুদ্ধের জন্যে অসংখ্য গান রচনা ক’রে অত্যন্ত বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন। “বঙ্গ-নাট্যালয়ে”র পরিচালকরা তাঁর কাছে গিয়ে ধর্না দিয়ে বললেন, ‘আমাদের জন্যে আপনাকে একখানি নাটক লিখে দিতে হবে।’ সেই নির্বন্ধাতিশয়ের ফলেই রচিত হয়, মনোমোহনের প্রথম নাটক “রামাভিষেক।”

 উক্ত নাটকের অসামান্য সাফল্য দেখে মনোমোহন উৎসাহিত হয়ে “সতী” নাটক রচনা করলেন। এই নাট্যাভিনয় তখনকার কলকাতায় একটি স্মরণীয় ঘটনা ব’লে গণ্য হয়েছিল। তারই কিছুকাল আগে সাধারণ বাংলা রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেখানকার প্রধান নাট্যকার ছিলেন দীনবন্ধু মিত্র। সেখানকার পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে ছিলেন “অমৃতবাজার পত্রিকার” সম্পাদক শিশিরকুমার ঘোষ, “ন্যাশনাল পেপার” সম্পাদক নবগোপাল মিত্রের সঙ্গে মনোমোহন বসুও (তিনি তখন “মধ্যস্থ” পত্রিকার সম্পাদক)। কিন্তু সাধারণ রঙ্গালয়ের বিখ্যাত নাট্যকার ও অভিনেতাদের (গিরিশচন্দ্র, অর্ধেন্দুশেখর ও অমৃতলাল বসু প্রভৃতি) সঙ্গে প্রতিযোগিতা ক’রেও “বঙ্গ-নাট্যালয়ে”র “সতী” এমন আসর জমিয়ে তুলেছিল যে, সাগ্রহে অভিনয় দেখতে আসতেন উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (কংগ্রেসের প্রথম প্রেসিডেণ্ট), কবিবর হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রমাধব ঘোষ (হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি) ও কুচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের মত স্বনামধন্য কৃতবিদ্য ব্যক্তিগণ।

১৬