পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

কোন ভ্রমণকাহিনী এত আদর পায় নি, এত লোকপ্রিয় হয় নি। সেই সময়েই তিনি সাহিত্যক্ষেত্রে লাভ করেন নিজের ন্যায্য আসন।

 কিন্তু কেবল ভ্রমণকাহিনী নয়, ছোটগল্প রচনাতেও প্রকাশ পেত তাঁর যথেষ্ট মুনশীয়ানা। এক্ষেত্রে তাঁর আন্তরিকতাপূর্ণ ভাষা পাঠকদের আকৃষ্ট করত তো বটেই, তার উপরে বোঝা যেত, ছোটগল্পের আর্টও তাঁর ভালোরকমই জানা আছে। তিনি উপন্যাসও রচনা করেছেন, সেগুলির বিষয়বস্তু হয়তো বিশেষ উল্লেখযোগ্য নয়, তাদের মধ্যে হয়তো যথেষ্ট মনীষার পরিচয় পাওয়া যায় না, কিন্তু ভাষার গুণে ও বর্ণনাভঙ্গির জন্যে সেগুলিও অর্জন করেছে অসাধারণ জনপ্রিয়তা। তাঁর কোন কোন উপন্যাসের চাহিদা শরৎচন্দ্রের বিখ্যাত উপন্যাসেরও চেয়ে কম হয় নি। যেমন “অভাগী”।

 সাপ্তাহিক বহুমতীর কার্যালয় যখন গ্রে স্ট্রীটে এবং আমার একটি কি দুটি রচনা যখন সবে মাসিক কাগজে প্রকাশিত হয়েছে, তখনই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। সে বোধ হয় প্রায় চার যুগ আগের কথা। কেউ আমাকে পরিচিত ক’রে দেয় নি, নিজেই গিয়ে পরিচিত হয়েছি। তাঁর ভ্রমণকাহিনীগুলি পাঠ ক’রেই তাঁকে আমার চোখে দেখবার ইচ্ছা হয়েছিল। ঠিক তারই আগে তাঁর বিশেষ বন্ধু দীনেন্দ্রকুমার রায়ের সঙ্গে গায়ে প’ড়ে আলাপ করতে গিয়ে কি ভাবে বিড়ম্বিত হয়েছিলুম পূর্বে সূত্রপাতেই তা বলেছি। সুতরাং তাঁর কাছে গিয়ে কি-রকম অভ্যর্থনা লাভ করব, সে বিষয়ে মনে মনে ছিল যথেষ্ট সন্দেহও।

 তখন তিনি সাপ্তাহিক বসুমতীর সম্পাদক। বসুমতী কার্যালয়ে প্রবেশ ক’রে সিঁড়ি দিয়ে দোতালায় উঠে দেখলুম, সামনের ঘরেই টেবিলের ওপাশে ব’সে আছেন জলধরবাবু। দেখেই চিনলুম,

১৬০