পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

কারণ পত্রিকায় তাঁর ছবি দেখেছি। মাথায় মাঝারি, দোহারা চেহারা, কৃষ্ণবর্ণ। মুখে দাড়ী-গোঁফ এবং একটি চুরুট।

 ধীরে ধীরে ঘরের ভিতর গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কাকে চান?’

 —‘আজ্ঞে, আমি আপনার কাছেই এসেছি।’

 —‘কিছু দরকার আছে?’

 —‘আপনার সব লেখাই পড়েছি, কিন্তু আপনাকে চোখে দেখি নি। তাই এসেছি।’

 তিনি একটুখানি হেসে বললেন, ‘বসুন।’

 বসলুম। আরো দু-চারটে কথাবার্তা হ’ল, সব কথা এতদিন পরে মনে পড়ছে না। তবে এইটুকু বেশ মনে আছে, তাঁর বিনীত ও মিষ্ট ব্যবহারে পরম আপ্যায়িত হয়ে বাড়ী ফিরে এসেছিলুম।

 তারপর তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে অসংখ্য বার। যখন যেখানে বাসা বেঁধেছেন, সেখানেই গিয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ করেছি এবং প্রতি বারেই ফিরে এসেছি মনের ভিতর খানিকটা সুমধুর প্রীতির ভাব নিয়ে। তিনি পরনিন্দাও করতেন না, কারুকে ছোট করতেও চাইতেন না এবং তাঁর ভাবভঙ্গিভাষায় কোনদিনই আমি এতটুকু হমবড়া ভাব লক্ষ্য করি নি, বরং অন্য কোন লেখককে প্রশংসা করবার সুযোগ পেলে তিনি হ’তেন যারপরনাই আনন্দিত। একটা দৃষ্টান্ত দি।

 কবিবর সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত যখন স্বর্গত হন, আমি তখন অশ্রান্ত ভাবে কবিতা রচনা করছি। সেই সময়ে বৈদ্যবাটী যুবক-সমিতি আমাকে অভিনন্দন দেবার জন্যে এক সভার আয়োজন করেন, সভাপতি ছিলেন শিল্প তথা সাহিত্যের আচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বহু বিখ্যাত সাহিত্যিক সভায় যোগদান করেছিলেন। জলধরবাবু

১৬১