পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাইশ

 সারাদিন একান্তভাবে সাহিত্যচর্চার পর সন্ধ্যার পর মন চাইত খানিকটা ছুটি পেতে। তাই এখানে-ওখানে যেখানেই গানবাজনার আসর বসত, প্রায়ই সেখানে গিয়ে হাজিরা দিয়ে আসতুম। মনের ছুটিকে সার্থক ক’রে তুলতে সঙ্গীতের মত আর জুড়ি নেই।

 ওস্তাদ করমতুল্লা খাঁ সাহেবের প্রসঙ্গেই বলেছি, আমার স্বর্গীয় বন্ধুবর নরেন্দ্রনাথ বসুর দর্জিপাড়ার বাড়ীতে প্রতি শনিবার সন্ধ্যাকালে বসত গান-বাজনার একটি চমৎকার বৈঠক। সেখানে কেবল করমতুল্লা খাঁয়ের সরোদের সঙ্গেই প্রথম পরিচিত হই নি, অন্ধগায়ক কৃষ্ণচন্দ্র দে-র গানও প্রথমে সেখানেই শুনেছিলুম। আর একজন গুণীও সেখানে আমাকে অবাক ক’রে দিয়েছিলেন। তিনি হচ্ছেন গয়ার বিখ্যাত ওস্তাদ হনুমানপ্রসাদের পুত্র সোনিজী। হারমোনিয়ম তো সবাই বাজায়, কিন্তু হারমোনিয়মের ধ্বনিতরঙ্গের মধ্যে কি বিচিত্র ইন্দ্রজাল যে আত্মগোপন ক’রে আছে, তা তেমনভাবে প্রকাশ করতে আর কারুকে দেখি নি। উচ্চতর ওস্তাদসমাজে হারমোনিয়ম কতকটা অবজ্ঞেয় হয়ে আছে। কিন্তু যথার্থ গুণীর হাতে পড়লে সেও করতে পারে অনুপম সৌন্দর্যসৃষ্টি। প্রায় চল্লিশ-বিয়াল্লিশ বৎসর আগে বিখ্যাত উকীল ও সাহিত্যিক শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র গুপ্ত ও কবি শ্রীযুক্ত ফণীন্দ্রনাথ রায় প্রভৃতির সঙ্গে শান্তিপুরে গিয়ে হারমোনিয়মের আর এক বাঙালী শিল্পীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলুম। তাঁর ডাকনাম ছিল বোধ করি বীণবাবু,

১৬৫