পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

এসে অধিকাংশ শিল্পীকেই সে যশ দিতে পারলেও টাকা দিতে পারে না।

 রাধিকানন্দ নানা রঙ্গালয়ে যত ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, এখানে তার সুদীর্ঘ তালিকা আর দাখিল করলুম না। কিন্তু কি গম্ভীর, কি বীর এবং কি হাস্যরসের অভিনয়ে তিনি ছিলেন সমান দক্ষ। “খাসদখলে”র নিতাইয়ের ভূমিকায় এবং “বলিদানে”র দুলালচাঁদের ভূমিকায় যথাক্রমে অমৃতলাল বসু ও দানীবাবু ছিলেন অতুলনীয়। কিন্তু ঐ দুটি ভূমিকাও গ্রহণ ক’রে তিনি বড় অল্প শক্তির পরিচয় দেন নি। গোড়ার দিকে তাঁর অভিনয় একটু অতিরিক্ত মাত্রায় ‘মেলো-ড্রামাটিক’ হয়ে উঠত বটে, কিন্তু ক্রমেই এই বাহুল্য থিতিয়ে যায় এবং তাঁর অভিনয় হয়ে ওঠে রীতিমত সংযত ও পরম স্বাভাবিক।

 আর এক শ্রেণীর ভূমিকাভিনয়ে নূতন দলের মধ্যে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন না আর কেউ। যখনই তিনি সাহেবের বা ইঙ্গবঙ্গের ভূমিকায় নেমেছেন, তখনই আসর একেবারে মাৎ ক’রে দিয়েছেন। সিমলার পাহাড়ে তিনি প্রায় য়ুরোপীয়দের মতই জীবনযাত্রা নির্বাহ করতেন এবং দীর্ঘকাল ধ’রে সাহেবদের সঙ্গে মেলামেশা করবার সুযোগ পেয়েছেন। হাউইট-ফিলিপদের বিলাতী নাট্য-সম্প্রদায় কিছুকাল সিমলার পাহাড়ে অবস্থান করে, সেই সময়ে তিনিও তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়ে একাধিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সুতরাং এ শ্রেণীর ভূমিকায় অভিনয় করবার মত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা যে তাঁর যথেষ্ট ছিল, এটুকু সহজেই বোঝা যায়। এই অভিজ্ঞতার অভাবেই আমাদের রঙ্গালয়ের সাহেবের ভূমিকাগুলি প্রায়ই দস্তুরমত হাস্যকর হয়ে ওঠে, সেগুলিকে সাহেবের সঙ ছাড়া আর কিছু বলা চলে না। “রাজা বাহাদুর” প্রহসনে মাতাল

১৭৭